খোর্শেদ আলম::
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনাঞ্চলে সম্প্রতি একধরনের রহস্যময় ফলের দেখা মিলেছে, যা দেখতে অনেকটা আঙুরের মতো। স্থানীয়রা একে ‘বন্য আঙুর’ নামে চেনেন। প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া এই লতা ও ফল নিয়ে স্থানীয়দের কৌতূহলের শেষ নেই। তবে বৈজ্ঞানিকভাবে এখনো এটি যথাযথভাবে চিহ্নিত না হওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে নানা প্রশ্ন। এই অজানা বুনো ফল হতে পারে নতুন কৃষি সম্ভাবনার একটি উৎস, যদি এটি নিরাপদ ও চাষযোগ্য প্রমাণিত হয়।
গাছে ঝুলে থাকা এই ফল গুচ্ছাকারে ধরে এবং কাচা অবস্থায় এর রং হয় গাঢ় সবুজ।
এই ফল মূলত বুনো লতায় ধরে। বছরের বর্ষা ও শরৎকালে এই লতা ফুল ও ফল ধারণ করে। স্থানীয় মানুষদের কাছে এটি নতুন কিছু নয়। তবে বৈজ্ঞানিকভাবে এখনো এর পরিচিতি খুব একটা হয়নি, ফলে এটি নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই।
বনে মাঝেমধ্যে যাওয়া আসা করেন স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক মিয়া। তিনি বলেন, “আমরা ছোটবেলা থেকে এই ফল গাছপালা ও ঝুপের মাঝে দেখতে পাই। অনেক সময় মজা করে খেয়েও ফেলেছি। খেতে হালকা টক-মিষ্টি ধরনের। ফলটি পাকা অবস্থায় কখনও খাওয়া হয়নি। তবে এখন এসব আর কেউ খায় না, কারণ অনেকে এটিকে বিষাক্ত বলে ভয় পায়।”
বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয় জুড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল আলম খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, “এই ফলটিকে স্থানীয়ভাবে বন্য আঙুর বলা হলেও এর বৈজ্ঞানিক নাম, গুণাগুণ এবং খাওয়ার উপযোগিতা সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। কিছু প্রজাতির বন্য ফল দৃষ্টিনন্দন হলেও বিষাক্ত হতে পারে। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রেখেছি। প্রয়োজনে কৃষি বিভাগ ও বন বিভাগের যৌথ উদ্যোগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে।”
তিনি বলেন, প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া এই লতা ও ফল যদি নিরাপদ হয় এবং চাষযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়, তাহলে এটি হতে পারে একটি বিকল্প ফল হিসেবে কৃষি সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত। পাশাপাশি, এটি স্থানীয় পর্যটনেরও আকর্ষণীয় উপাদান হতে পারে।
স্থানীয়দের মতে, গবেষণা ও সচেতনতা বাড়ালে এমন অনেক প্রাকৃতিক সম্পদ আমাদের নতুন সম্ভাবনার দিক দেখাতে পারে।
জুড়ীরসময়/কেআ/সাইফ