শফি আহমদ::
চিরহরিৎ, চিরসবুজের বৈচিত্র্যময় এই বাংলায় শীতকাল এলেই শুরু হয় কোরআনের মাহফিলের আয়োজন। শীত যেন মুসলমানদের ধর্মীয় পরিবেশকে করে তোলে আরো উপযোগী। আরো উৎসবমুখর। করবেই না বা কেন, কেননা এই শীতকালকেই রাসূলে কারিম (সা.) মুমিনের জন্য ঋতুরাজ বসন্ত বলে আখ্যায়িত করেছেন। এমন বরকতময় পরিবেশে বাংলাদেশের প্রচলিত কোরআনের মাহফিলগুলো মুসলমানদের হৃদয়ে নিয়ে আসে প্রশান্তির বরফ। বাইরের ঠান্ডা বরফকে উপেক্ষা করে হৃদয়ের সেই খোরাককে ধারণ করবার জন্য হাজার লক্ষ্য টাকা ব্যয়ে আয়োজিত হয় কোরআনের মাহফিল। দেশবরেণ্য আলেম,উলামাসহ সেখানে দাওয়াত পান দেশি বিদেশি হাফেজ, ক্বারীগণ। তাদের সুললিত কণ্ঠ, সহজ ব্যাখা, বিশ্লেষণ আমাদেরকে আরো উদার, জ্ঞানী, পরোপকারী, ধার্মিক করে তোলবার জন্যই এমন আয়োজন আর এত অর্থ ব্যয়। কিন্তু বর্তমানের মাহফিলগুলো থেকে আমরা কি শিখছি?
এত বিশাল বিশাল মাহফিল আর হাজার লক্ষ টাকা অর্থ ব্যয়ে আমরা কি লানত বয়ে আনতেছি? তাই যদি না হয় তাহলে এমন বরকতপূর্ণ মাহফিলের নাম করে কেন বাউল বক্তা আর কমেডিয়ান, জোকারদের দিয়ে হাসি তামাশার রঙ মঞ্চ হয়ে উঠলো এই চিরাচরিত আমাদের দ্বীনি মজলিশগুলো? আমাদের কোন জিনিসটাকে নিয়ে হাসাহাসি করার বাকি রইলো? কোরআনের মাহফিলকে নিয়ে? কোরআনকে নিয়ে?
এমনি এক ভারতীয় জোকার যিনি সরলতার সুযোগ দেখিয়ে অশালীন মূর্খতার ভাষায় সবকিছু উপস্থাপন করে কোরআনের মঞ্চে উপস্থিত হচ্ছেন প্রতিদিন। খুব সম্ভবত উনার সবগুলো নাটক সিলেটেই মঞ্চস্থ হচ্ছে কেননা এই বক্তা শুদ্ধ বাংলার 'শ' বলতে পারবেন কি না সন্দেহ! কোরআনের মাহফিলে উঠে টাকা ভিক্ষা থেকে শুরু করে একদম কাঁচা ভাষায় যা মুখে দিয়ে আসতেছে তাই বলে বেড়াচ্ছেন উনি। টিকটকের দোয়া, ফেইসবুকের দোয়া, লাউ বিচি, উড়ি বিচি ভিক্ষা থেকে নিয়ে মানুষকে হাসাতে যা করার সবটুকু করে চলেছেন কোরআনের মাহফিলে। কখনোবা মাইক ঠ্যালা মেরে উঠে চলে যাওয়ার হুমকি। কমিটির লোক আবার টেনে বসানো, যুবকদের নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ অশালীন কথা অর্থাৎ ইসলামকে তামাশার ধর্ম বানাতে যা করা লাগে তার সবটুকুই করছেন এই বক্তা। আর সেটা সাধরে গ্রহন করে নিচ্ছে কথায় কথায় ঠিক বলে উঠা তাওহীদি জনতাও। আগে মানুষ মজা লুঠতে সিনেমা, নাটক দেখতো আর এখন দেখে ওয়াজ মাহফিল। আস্তাগফিরুল্লাহ।
লেখক: শফি আহমেদ
জুড়ীরসময়/ডেস্ক/আবিদ