খালেদ মাসুদ::
বাজারে প্রবেশ করে ঘুরে ঘুরে সবকিছুর দাম দেখে নিচ্ছেন ক্রেতা। শুরুতে যেই পেঁয়াজের দাম কেজি ১২০টাকা শুনছিলেন, তা সঙ্গে সঙ্গে দাম বাড়ার খবর শুনে গিয়ে দেখেন ১৫০ টাকা হয়ে গেছে।
নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির ফলে মানুষের মাসিক আয় ব্যয় পরিকল্পনায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। মানুষ তার খাদ্য তালিকা সংকুচিত করতে মজবুর হচ্ছে। হঠাৎ করে দেশে কিছু নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। কিন্তু মূল্য বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিক কারণ জনগণের সামনে উপস্থিত করা হয় না। কখনও পেঁয়াজ, কখনও রসুন, কখনও আলু, কখনও ডিম,লবনসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়। এরকমও পরিস্থিতি হয়, পেঁয়াজের দাম কমলে লবনের দাম বাড়ে। একটা কমলে আরেকটা বৃদ্ধি পায়।
দাম বৃদ্ধি মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলছে। সরকার বিভিন্ন সময় বিশ্লেষণে দেশের পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত আছে বলে জানায়। কিন্তু কেনো কিভাবে রাতারাতি দাম বাড়ে তা জনগণ সহজে বুঝতে পারে না।ব্যবসায়ী সমিতিরা যখন বলে, বাজার স্থিতিশীল। তখন সাধারণ মানুষ তাদের কথায় ভরসা রাখতে পারে না। রাতারাতি দাম বাড়ার পিছনে সর্বত্র সিন্ডিকেট মহল দায়ী।কোথাও মিল মালিক সিন্ডিকেট, কোথাও আড়তদার সিন্ডিকেট, কোথাও পাইকারি সিন্ডিকেট। যেনো জনগণের পকেট কেটে টাকা নেওয়ার এক অসভ্য প্রতিযোগিতা।ভোক্তা অধিকার যখনই অভিযান চালায় দেখা যায়, পাইকারি দোকানী বা ছোট ছোট মিল মালিক বা খুচরা দোকানীকে জরিমানা করে। আদতে এতে কতোটুকু লাভ হয় বোধগম্য নয়। রাঘববোয়ালরা হাতছাড়া সবসময় হয় বা তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
অতিবিদেশ নির্ভর দেশের জন্য অভিশাপ আকার ধারণ করছে। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি করবে না বলায় রাতারাতি বাতাসের গতিতে দাম বৃদ্ধি পায়! এই দাম বৃদ্ধি কতোটুকু যৌক্তিক? এই দাম বৃদ্ধির পেছনে কার হাত?বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যদি বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না তাহলে মন্ত্রীর উচিত চেয়ার ছেড়ে দেওয়া। নতুন কাউকে দেওয়া, যে দেশ ও দশের চিন্তা করবে। গত ২৬শে জুন সংসদ অধিবেশন চলাকালে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতাদের কঠোর সমালোচনা ও ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন।
মন্ত্রী এমন সমালোচনার জবাবে বলেছিলেন, 'চাইলে জেল-জরিমানাসহ বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। এটা ঠিক যে বড় বড় গ্রুপগুলো একসঙ্গে অনেক বেশি ব্যবসা করে।"
বিশ্ববাজারের কারণে যদি কোনো পণ্যের দাম বাড়ে ১০ শতাংশ, ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে সে পণ্যের দাম বাড়ে ৮০-৯০ শতাংশ। প্রতিটি পণ্যেই রয়েছে বাজার সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের সামনে জনগণ অসহায়। সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারায় সরকারকেও অসহায় দেখা যাচ্ছে। জনগণ চায় দ্রুত এই হতাশার মেঘ কেটে যাক।
লেখক: উপ সাহিত্য সম্পাদক, জুড়ীরসময়
জুড়ীরসময়/ডেস্ক/হোসাইন