জীবিত লাশের সংগ্রাম

জীবিত লাশের সংগ্রাম


প্রিতময় সেন::

বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের যে হারে দাম বেড়েছে, তা কল্পনাতীত। এ কারণে মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত এবং দিন এনে দিন খাওয়া পরিবারের অবস্থা খুবই খারাপ। দ্রব্যমূল্য বাড়ছে তো বাড়ছেই, কিন্তু বাড়ছে না মানুষের আয়রোজগার। সেই আয়রোজগারে বর্তমানের দিনযাপনের খরচ মেটানো খুবই দুর্লভ।

এভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়তে থাকলে মানুষ বাঁচবে কী করে! হয়তো কত হতদরিদ্র মানুষের ঘরে ঠিকঠাক চুলাই জ্বলে না। তাদের সন্তানেরা ঠিকঠাক খাবার খেতে না পেয়ে কান্না করে। অসহায় মা-বাবা হয়তো অশ্রুসিক্ত হয়ে তখন দোষ দেন নিজেদের, নিজেদের ভাগ্যের।

আমরা যদি বর্তমান প্রেক্ষাপট দেখি, তাহলে দেখব, প্রতিটি খাতে সবকিছুরই দাম বাড়ছে। একটি খাতের কোনো কিছুর দাম বাড়লে, আরেকটি খাতের অন্য কিছুর দাম বেড়ে যাচ্ছে। যেমন জ্বালানির দাম বাড়ায় বাড়ছে পরিবহন খরচ, পরিবহন খরচ বাড়ায় বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর দাম। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কিংবা দালাল শ্রেণির লোকের কারণে যেন এ সংকট বেড়েই চলেছে। সাধারণ মানুষের এখন যেন আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলে না।

এখন সাধারণ মানুষ হচ্ছে জীবিত লাশের মতো, প্রাণ থাকা সত্ত্বেও দুনিয়ায় বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। জীবন থাকা সত্ত্বেও তাদের জন্য পৃথিবী কঠিন। কত কঠিন দিন তারা পার করে এই আশাতে যে একদিন তারাও প্রাণ খুলে হাসবে। সন্তানের মুখে তাদের পছন্দের খাবার তুলে দেবে। এরপরও মানুষ হতাশ হয় না। যত কষ্টই হোক না কেন, তারা আশায় বুক বাঁধে। কারণ, জীবন বিচিত্র, তবু জীবন সুন্দর। জীবনসংগ্রামে জয়ী হোক সব লোক।

লেখক: প্রিতময় সেন

তরুণ লেখক, খাগড়াছড়ি।