সেদিন রাতে জুড়ী আ.লীগ কার্যালয়ে কি ঘটেছিলো!

সেদিন রাতে জুড়ী আ.লীগ কার্যালয়ে কি ঘটেছিলো!
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিও থেকে ছবি


বিশেষ প্রতিবেদক::

মৌলভীবাজারের জুড়ীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুক মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের জুড়ী উপজেলা শাখার সভাপতি সাহাব উদ্দিন সাবেলের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে দলের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ-অসন্তোষ বিরাজ করছে।

গত বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।

ছাত্রলীগ সভাপতি সাহাব উদ্দিন সাবেলের এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ এবং অশালীন ভাষা ব্যবহারের প্রতিকার চেয়ে জেলা আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মী সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বির্তকিত একটি বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে আসেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাহাব উদ্দিন সাবেল, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল ভূইয়া উজ্জ্বল, জুড়ী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আদনান আশফাক, সাধারণ সম্পাদক গৌতম দাস। সেখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুক মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ও ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুক আহমদসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসময় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ছাত্রলীগ নেতাদের সেখানে সংবাদ সম্মেলন করতে নিষেধ করেন। তখন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাহাব উদ্দিন সাবেল ক্ষিপ্ত হয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ নেতৃবৃন্দকে তুই-তোকারি করে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ এবং অশালীন ভাষায় গালাগাল শুরু করেন। এরপর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, ‘তোমার মন্ত্রীর সাথে তুমি বুজো, আমার বুজার দরকার নাই। আমি সংবাদ সম্মেলন করবই।’

ঘটনার পর রাতেই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসায় জরুরী বৈঠকে বসেন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মাসুক মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন লেমন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল ইসলাম কাজল, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক কিশোর রায় চৌধুরী মনি, সদস্য শেখরুল ইসলামসহ যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

বৈঠকে ছাত্রলীগের সভাপতির এমন কর্মকাণ্ডে উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন এবং তার এমন আচরণের প্রতিকার চেয়ে জেলা আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের কাছে অভিযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

জুড়ীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুক মিয়া মুঠোফোনে বলেন, ‘ছেলেটা খুব খারাপ আচরণ করছে। সংবাদ সম্মেলন করার জন্য একটা ব্যানার নিয়ে আসছে আওয়ামী লীগের অফিসে। আমরা বললাম যে একটা বিতর্কিত বিষয়। এখানে সংবাদ সম্মেলন না করার জন্য তাকে পরামর্শ দেই। এই কথা বলার পর সে যে আচরণ করেছে আমাদের সাথে তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। বিষয়টি আমরা জেলা আওয়ামী লীগকে জানিয়েছি।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদ বলেন, ‘ছাত্রলীগের সভাপতি যে কাজ করেছে তা অত্যন্ত নিন্দার। যা প্রকাশ করার কোনো ভাষা নেই। বুধবারও সে যুবলীগের একজন সিনিয়র নেতার সাথে বেয়াদবি করেছে। পরে আমরা তা সমাধান করে দিয়েছি।’

অভিযুক্ত উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাহাব উদ্দিন সাবেল তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে ভুল বোঝাবুজি হয়েছে, এটা সমাধান হয়ে যাবে।’

সূত্র: সিলেট টুডে

জুড়ীরসময়/নোমান/সাইফ