জুড়ীতে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা আত্মসাতের মামলায় ইউপি সদস্য কারাগারে

জুড়ীতে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা আত্মসাতের মামলায় ইউপি সদস্য কারাগারে


নিজস্ব প্রতিবেদক:

মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার ৭নং ফুলতলা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য  মাহবুবুল আলম রওশন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সেজে ভাতা আত্মসাতের মামলায় মৌলভীবাজার জেল হাজতে আছেন। রওশনের বিরুদ্বে মৃত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলনের প্রমান পেয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আদালতে প্রতিবেদন প্রদান করেন। 

গত ২৮ মার্চ থেকে তিনি আত্নসাতের মামলায় কারাভোগ করছেন। এ দিন তিনি আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। 

জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত কাগজ জাল জালিয়াতি করে মাহবুব আলম রওশন রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা ও ভাতা আত্মসাত করে আসছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে দীর্ঘ অনুসন্ধান ও তদন্ত শেষে পিবিআই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করলে আদালত  প্রতিবেদন আমলে নিয়ে মাহবুবুল আলম রওশন এর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির আদেশ প্রদান করেন।

জানা গেছে, কমলগঞ্জ উপজেলার ১নং রহিমপুর ইউনিয়নের কালেঙ্গা গ্রামের মরহুম বীরমুক্তিযোদ্ধা শফিক মিয়ার ভুয়া সন্তান সেজে জুড়ী উপজেলার ৭নং ফুলতলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য মাহবুবুল আলম রওশন ভাতা উত্তোলন করে আসছিলেন। 

এ ঘটনায় কালেঙ্গা গ্রামের মরহুম মুক্তিযোদ্ধা শফিক মিয়ার ছেলে মোঃ কামাল মিয়া বাদী হয়ে বিগত ২৯-০৩-২০২১ইং তারিখে মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (মামলা নং- সি.আর-৩৮/২০২১ (জুড়ী)  দায়ের করেন। এর পর থেকেই প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধার সন্তান মোঃ কামাল মিয়াকে মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন প্রকার হুমকি-ধামকি অব্যাহত রাখেন। ৭ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিক মিয়ার স্ত্রী আজিরুন বেগম।

আজিরুন বেগম লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান দাবীদার মাহবুবুল আলম রওশন একজন প্রতারক, মিথ্যাবাদী ও ধোঁকাবাজ। লিখিত অভিযোগে তিনি জানান, মুক্তিযোদ্ধা শফিক মিয়া বিগত ১১/১২/২০০৬ইং তারিখে কালেঙ্গা গ্রামের বর্তমান ঠিকানায় মৃত্যুবরণ করেন। স্বামীর মৃত্যুর সময় ২ পুত্র ও ৪ কন্যা সন্তানকে রেখে মারা যান। বিগত ২০০৭ ইংরেজীর জুলাই মাস হইতে নিয়মিত স্বামীর উত্তরাধীকারী সূত্রে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন করিয়া অদ্যাবধি পর্যন্ত আসিতেছেন। সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তিনি জানিতে পারেন যে, তার স্বামীর ভূয়া সন্তান সেজে মুক্তিযুদ্ধা ভাতা উত্তোলন করিতেছেন মাহবুবুল আলম রওশন।

তিনি আরও জানান, মাহবুবুল আলম রওশনের চাচারা হলেন, উকিল মিয়া, মুক্তার মিয়া, মৃত রফিক মিয়া, ময়ুর মিয়া এবং তার ফুফুদের ভোটার আইডিতে তাদের পিতার নাম রেজান আলী উল্লেখ রয়েছে। কিভাবে তার দাদার নাম রেজান আলীর স্থলে আজন মিয়া করলেন? পিবিআই এর সঠিক তদন্তের মাধ্যমে জালিয়াতি তথ্য বের হয়ে এসেছে।

জুড়ীরসময়/মনিরুল/এএ