নিজেকে যখন প্রশ্নে রাখি
-আরাফাত জামান
(এক)
আমার কি করা উচিত?
কমালাকৃতির এ আজব গ্রহে,
যখন রক্তের বদলে যদি
একটা ফোঁটা জলও জুটল না,
আহত শরীর একটুকু শান্তনা পায় না,
চারিপাশে এতো সবুজ, এতো পরিপাটি
তবুও শ্বাসটুকু নিতে দিলো না।
আমার কি করা উচিত তাদের সাথে?
যদি তুফানের সময় ডালপালা
নিজেকে ঘুটিয়ে নেয়
পাখির পাখারা যদি বাতাসের
সাথে লড়তে না চায়!
আপন কাঁটা যদি গোলাপকে বিঁধতে চায়?
তবে কি করা উচিত?
আমি কি পারবো আপন হাতখানি কেটে ফেলে দিতে?
নাকি নাকের সাথে বিদ্রোহ করতে
তুই নিবি না ব্যাপনের ঐ দূর্গন্ধটারে!
কেটে রাখতে জিহ্বার সেখানটা!
যেখানে বিস্বাদের জন্ম হয়।
আমার কি করার আছে তাহলে?
আনমনে ভাবনার উদয় হয়,
বনেই বা কেন ঘর বাঁধলাম না!
নিশ্চই সন্ধ্যার জোনাকিরা দূরে সরে যেতো না,
হাসনাহেনার ঘ্রাণে ভুলে যেতাম বারুদের গন্ধ,
আম কাঁঠালেরা মুখ ফিরিয়ে নিতো না,
কাঠবিড়ালি এনো দিতে সাজিয়ে।
মনে হয় বেশ হতো গোলপাতার ছাউনি,
চাঁদের জোছনা মাখানো নিস্তব্ধ রাত।
বন্যই যদি হয়ে যেতাম তবে হৃদয়হীন হতাম না
সেসব সভ্যদের এ সভ্যতায়।
আমার কি করা উচিত এখন?
ইট পাথরে গড়া এ ছেলেখেলায়।
(দুই)
ছুটছি তো ছুটছিই, আমার পেছনে সারি
আর আরো সারির পেছনে আমি।
তাকে দেখে আমি,
না হয় আমাকে দেখে সে।
২ চাকায় ভরে করে চার চাকার সরষে ভূত।
একতলায় থাকি, দু'তলার স্বপ্নে চড়ে।
কেউ পার করে জীবন ছায়ায় সন্ধান করে করে।
এ যেন ক্লান্তি আসে বিশ্রামের তরে,
বিশ্রাম ফুরায় আবার ক্লান্ত হবে তাই।
দিন রাতির মতো আহ্নিক গতি
সুখের কক্ষপথে ঘুরে,
হারাচ্ছে তার সবটুকু শক্তি,
একটু আধটু করে।
জানি একদিন মিশে যাবে শুন্যে,
এভাবে শক্তি বিকিরণ করে করে।
আমার কি করা উচিত তবে?
ভাবার এ সময় কবে হবে?
কবে এ আত্মা প্রশান্তির মাঝে নিমজ্জিত হবে?
লেখক: সহকারি শিক্ষক, আল ফালাহ ইসলামিক একাডেমী, জুড়ী
জুড়ীরসময়/ডেস্ক/এস