পর্যটকদের নতুন আকর্ষণ জুড়ীর কাশ্মীর টিলা

পর্যটকদের নতুন আকর্ষণ জুড়ীর কাশ্মীর টিলা
সাইফুল্লাহ হাসান::

ঢেউ ঢেউ টিলা। পুরো জায়গা জুড়ে সবুজের হাতছানি। গাছ আর উঁচু টিলা মিলে হয়েছে সবুজের মহামিলন। বেশি আকর্ষণ মন কাড়ানো টিলার উপর থেকে বিস্তৃত চারদিক। গত তিনে বছর থেকে প্রচলিত হচ্ছে কাশ্মীর টিলা নামে। তবে এবছর ঈদের মৌসুমে প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থীরা আসছেন এই জায়গায়।

স্থানটি মৌলভীবাজার জেলার সীমান্তবর্তী জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের শুকনা ছড়া এলাকায় অবস্থিত।

পরিবেশ বান্ধব ও পকৃতির নানান ছোঁয়ায় আবদ্ধ হওয়ায় স্থানটির প্রতিটা দৃশ্য মনোমুগ্ধকর। ফলে ভ্রমণ, রমজানের ইফতার আয়োজন সহ ঈদ উদযাপনে প্রচুর পর্যটকদের দেখা মেলে এখানে। সৌন্দর্য যেন চোখ ফেরাতে বাধা দেয়, সবুজ ঘাসের দৃশ্য বারবার উপভোগে নিমগ্ন করে। সুন্দরতার পাহাড়া দিচ্ছে যেন পেছনের দাড়িয়ে থাকা সেগুন গাছ। সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা এই গাছ গুলোর নেতৃত্ব বহুকাল আগের।

পর্যটকদের নতুন আকর্ষণ জুড়ীর কাশ্মীর টিলা

স্থানীয় পরিবেশ কর্মী খোরশেদ আলমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, গত ৩ বছর আগে শাহীন আহমদ নামের এক পর্যটক ঘুরতে আসেন আমাদের এলাকায়। তিনি সবকিছু ঘুরার পর এই টিলায় একবার যান। তার কিছুদিন পর সাময়িকী একটি বইয়ে উনার একটি লেখা ছাপা হয়। সেখানে তিনি এই টিলার সৌন্দর্য বলতে গিয়ে কাশ্মীরি টিলা নামে লিখেন। এরপর থেকে আমরা এই টিলাকে কাশ্মীরি টিলা নামে প্রচার করতে থাকি।

তিনি বলেন, স্থানটির প্রতিটা দৃশ্য প্রশংসনীয়, পর্যটকদের এক প্রকার প্রশান্তির সুখ। এরকম একটা যায়গায় জড়ো হওয়া সত্যি ভাগ্যের ছোঁয়া।

খোরশেদ আরও বলেন, জুড়ী উপজেলায় আমার দেখা দৃষ্টিনন্দন স্থানের মধ্যে অন্যতম স্থান কাশ্মীর টিলা। স্থানটি পরিবেশগত ভূমিকা পালনে অটল, বিধায় এটি একটি পর্যটন স্পট হিসেবে গণ্য হতে পারে।

ঘুরতে আসা পর্যটক জিল্লু আহমেদ বলেন, স্থানটি অবশ্যই পকৃতি প্রেমিকদের এক তৃপ্তির অধ্যায় হিসেবে গণ্য। চোখের সামনে ধারণিত এই স্থানটা অতীতে কারো নজরে ছিলো না। এখন আমি সহ আমার আশেপাশের অনেকেই এখানে উপভোগে জড়িত হই। প্রতিদিন শত শত বাইক নিয়ে অনেক পর্যটকরা এখানে আসছেন।

পর্যটকদের নতুন আকর্ষণ জুড়ীর কাশ্মীর টিলা

তরুণ লেখক আবিদ হোসেন বলেন, জায়গাটি অনেক সুন্দর। টিলাটির উপরে উঠলে মনে হয় কাশ্মীরের কোথাও দাঁড়িয়ে আছি। এ বছর আমরা বন্ধু-বান্ধব মিলে একদিন ইফতার করেছি এই টিলার উপর।

স্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জুড়ীর সময়ের সম্পাদক আশরাফ আলী বলেন, জুড়ীতে অনেক পর্যটন স্পট রয়েছে। এগুলো যদি সঠিক পরিচর্যা করা যায় তাহলে এখান থেকে সরকারও একটি রাজস্ব আয় করবে। কাশ্মীর টিলা গত ২/৩ বছর থেকে ব্যাপক পরিচিতি পাচ্ছে। এখানে আসলে সবুজ টিলা, সবুজ গাছের সারিসহ পাখির কলকাকলীতে মন ভরে যায়। সত্যিই এখানে দর্শনার্থীরা আসলেও অনেক ভালো লাগবে। প্রতিদিন প্রচুর পর্যটকের সমাগম হচ্ছে এখানে।

যেভাবে যাবেন:-

মৌলভীবাজার থেকে জুড়ী বাজারে আসার পর উঠতে হবে কচুরগুল এলাকার গাড়িতে। পরে রাস্তায় নামতে হবে কালামাটি এলাকায় (সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার হবে)। সেখানে একটা চা স্টল আছে, কাশ্মীর টিলার কথা জিজ্ঞেস করলে মানুষ দেখিয়ে দিবে কোন দিকে যাওয়ার রাস্তা। হেঁটে যেতে হবে সর্বোচ্চ ১০ মিনিটের রাস্তা। আর বাইকে অথবা একটা সিএনজি রিজার্ভ করে নিয়ে আসলে সরাসরি মুল জায়গাতেই যাওয়া যাবে।

জুড়ীরসময়/সাইফুল্লাহ/আবিদ/ডেস্ক