রচনা: বিজয়ের অঙ্গীকার

বিজয়ের অঙ্গীকার

-মাহমুদ হাসান

আসসালামুআলাইকুম। মহান বিজয় দিবস। বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক স্মরনিয় ও বরনিয় দিন। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ থেকে ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত এই বাংলার জমিন জুড়ে কি ঘটেছিলো তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখেনা।কতো সংগ্রাম এবং লাখো কিংবদন্তির আত্নত্যাগে মহান আল্লাহর মেহেরবানিতে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের উত্থান ঘটে।স্বাধীনতার স্বাদ আস্বাদন করানোর জন্য কতো বিপ্লবী বন্দুর রক্তে রঞ্জীত হয়েছে এই জমিন। 
কতো কৃষক, কতো দিনমজুর, কতো আলেমদেরকে প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়েছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। এতো ত্যাগ তিথিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত স্বাধিনতার সুবর্ণ জয়ন্তিতে এসে আদৌ আমরা স্বাধিনতা লাভ করতে পেরেছি কি? 

এই প্রশ্ন আজ গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বাঙালি বিবেকের কাছে। স্বাধিনতার মানে কি ছাগলের হাত থেকে বেড়িয়ে সিংহের কবলে পরা? প্রতিবেশি দেশ ভারত আমাদেরকে যেভাবে শোষন করছে তা দেখে মনে হয় না যে আমরা স্বাধিনতা লাভ করেছি। বিজয় দিবসের মানে কি এই যে,ঢাকার বেইলি রোডের ফুটপাতে বিজয় উল্লাসে মাতোয়ারা হয়ে নারি ধর্ষন? বিজয় দিবসের মানে কি প্রতিহিংসার জেরে প্রতিপক্ষকে রাজাকার বলে বাড়ি-ঘড় ভাঙচুর? বিজয় দিবসের মানে কি রাস্তায় রাস্তায় ব্যানার-ফেস্টুনের মাধ্যমে শুভেচ্ছা অভিনন্দন? 

না,,,,। এইসব কর্মকাণ্ড লাখো শহিদের প্রতি শ্রদ্ধাকে সমর্থন করে না।যে বিজয় উল্লাস নারি ধর্ষন করতে দ্বিধাবোদ করেনা, যে বিজয় উল্লাস বাড়ি-ঘড় ভাঙচুর করতে দ্বিধাবোদ করেনা, সে বিজয় উল্লাস আমরা চাই না।আমরা চাই বদর যুদ্ধের বিজয়ের মতো একটি বিজয়। যে উল্লাস মক্কা বিজয়ের পর করেছিলো আরববাসি, সে বিজয় উল্লাস আমরা চাই। আমি বিজয় উল্লাস করতে গিয়ে ধর্মকে ভুলে যেতে পারিনা। নিজস্ব সংস্কৃতি রক্ষার আদলে অনৈতিক সংস্কৃতির চর্চা করতে পারিনা।

মুক্তিযুদ্ধের এ বিজয় নিশ্চই আমাদের বাঙালির ইতিহাসকে বলে দেয়।ডিসেম্বর মাস এলে ছোট-বড় গাড়ি,অফিস-আদালত,বাসভবন সহ বিভিন্ন জায়গায় দেশের পতাকা দেখে মনে হয় যেন এইমাত্র দেশ স্বাধিন হলো।কতো আনন্দ ঝরা কন্ঠে শিল্পিরা গান গেয়ে উটেন,,,

"একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতা
সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার" 
কিন্তু যখনই দেশপ্রেমিক বলে কথার বুলি ফুটানো লোকদেরকে দেশদ্রোহিতার কাজ করতে শুনা যায় তখন আর বলতে ইচ্ছা করেনা,,,
"বিজয় আমার আকাশ ছোয়া
বিজয় আমার দেশ,
দেশটি আমার বিশ্ব মাঝে 
দাড়িয়ে আছে বেশ"
বরং এই প্রান্তে দাড়িয়ে মনে পরে শিল্পি হায়দার হোসেনের সেই কালজয়ি গান,,,
" কি বলার ছিলো কি বলছি
কি ভাবার ছিলো কি ভাবছি
কি জানার ছিলো কি জানছি
কি মানার ছিলো কি মানছি
এতটা বছর পরেও আমি স্বাধিনতাটাকে খুজছি"
তাই প্রিয় বন্দুরা আসুন, একাত্তরের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জানি এবং অতন্দ্র প্রহরির ন্যায় দাড়িয়ে যাই এই স্বাধিন ভূখণ্ড রক্ষার কাজে।
"বিজেয়ের দিন হোক শপথের দিন
স্বাধিনতা রক্ষায় হবো ভয়হীন"

জুড়ীরসময়/ডেস্ক