মৌলভীবাজার মুক্ত হলো আজ


স্টাফ রিপোর্টার::

আজ ডিসেম্বরে ৮ তারিখ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকহানাদারদের পরাজিত করে হানাদারমুক্ত হয় মৌলভীবাজার। 
২ ডিসেম্বর রাতে মৌলভীবাজারের পূর্ব সীমান্তের কাছাকাছি শমসেরনগর বিমানবন্দর ও চাতলাপুর বিওপিতে পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীর অবস্থানের উপর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সম্মিলিত আক্রমণ শুরু হয়। তীব্র আক্রমণের মুখে পাক সেনারা শমশেরনগরে টিকতে না পেরে মৌলভীবাজার শহরে ফিরে আসে।

মৌলভীবাজারে ছিল পাক সেনাদের ব্রিগেড হেড কোয়ার্টার। মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনী মৌলভীবাজার দখলের উদ্দেশ্যে ৪ ডিসেম্বর বিকেল ৪টার দিকে শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে কালেঙ্গা পাহাড়ে অবস্থান নেয়। সেখানে বড়টিলা নামক জায়গায় পাক বাহিনীর সঙ্গে মিত্র বাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে মিত্র বাহিনীর ১২৭ জন সেনা নিহত হন।

৫ ডিসেম্বর থেকে পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীর প্রতিরক্ষা ব্যুহ ভেঙে পড়তে শুরু করে। ফলে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনীর যৌথ হামলা প্রতিরোধ করতে তারা ব্যর্থ হতে থাকে। এ অঞ্চলের পরাজিত পাকিস্থানি সৈন্যরা তখন সিলেট অভিমুখে পালাতে শুরু করে। এসময় তাদের এলোপাতাড়ি গুলিতে অনেক সাধারণ মানুষ নিহত ও জখম হন।

সিলেটে যাওয়ার পথে তারা শেরপুরে অবস্থান নেয়। পরে অবস্থান নিরাপদ নয় মনে করে সিলেট চলে যায়। এই ঘাতক বাহিনীর পিছু হটার ফলে ৮ ডিসেম্বর পুরো মৌলভীবাজার হানাদারমুক্ত হয় এবং আকাশে উড়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা।

মৌলভীবাজারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল এক হাজার ৪শত ৭০ জন। এরমধ্যে সংগঠক ছিলেন দুইশ এর বেশি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক গনপরিষদ সদস্য ও জেলা পরিষদর চেয়ারম্যা  আজিজুর রহমান ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বরের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ওই দিন তৎকালীন মহকুমা প্রশাসকের বাংলোতে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়।

এদিকে এ উপলক্ষে রোববার ৮ ডিসেম্বর সকালে মৌলভীবাজারে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পন, বিজয় র্যালী, আলোচনা সভা ও সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য নেছার আহমদ, জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আজিজুর রহমান, পুলিশ সুপার ফারুক আহমদ, পৌর মেয়র ফজলুর রহমান, জেলা মুক্তিযোদ্ধ কমান্ডার জামাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আজমল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক রাধাপদ দেব সজল, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সদস্য আব্দুল মালিক তরফদার ভিপি সোয়েবসহ রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।


পরে এক বিজয় র্যা লী বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মুক্ত দিবস উপলক্ষে সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন গুলো আলোচনা সভা ও সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।