থানার পরিচ্ছন্নতাকর্মীর ছেলে পেলেন পুলিশে চাকরি

থানার পরিচ্ছন্নতাকর্মীর ছেলে পেলেন পুলিশে চাকরি

নিজস্ব প্রতিবেদক::

মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় পরিছন্নতা কর্মী হিসেবে কাজ করেন রিপন মিয়া। সেই পরিচ্ছন্নতা কর্মী বাবার ছেলে দেলোয়ার হোসেন নিজেই পেলেন পুলিশে চাকরি। মাত্র ১৩০ টাকা খরচ করে নিজের মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে মৌলভীবাজার জেলা থেকে পুলিশের কনস্টেবল পদে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। 

দেলোয়ার হোসেনের বাড়ি মৌলভীবাজার পুলিশ সাইন্সের পাশে গোমড়া গ্রামে। আবার বাবার কর্মস্থলও সেই পুলিশের থানায়। পুলিশের ইউনিফর্ম পড়া মানুষজন দেখেই পুলিশে চাকরির ইচ্ছা জাগে ছেলে দেলোয়ারের। 

পরিবারে চার ভাই-বোনের মধ্যে বড় দেলোয়ার জানান, 'ছোট থেকেই পুলিশ লাইন্সে পুলিশ দেখেছি, এটাই আমার ইন্সপিরেশন হিসেবে কাজ করেছে। আমার স্বপ্ন ছিল পুলিশ হব। আমি গত বছরও কনস্টেবল পদে চাকরির পরীক্ষা দেই। কিন্তু লিখিত পরীক্ষায় গতবার পাশ করতে পারিনি। এবার আমি ভালো করে প্রস্তুতি নিয়েই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি। আলহামদুলিল্লাহ নিজের চেষ্টা, নিজের যোগ্যতা দিয়ে আজকে চাকরির জন্য নির্বাচিত হয়েছি।' 

বাবা রিপন মিয়া জানান, পুলিশের থানায় চাকরি করি, একদিন আমার ছেলেও পুলিশ হবে এমন স্বপ্ন দেখতাম। আগে শুনতাম পুলিশের চাকরি পাইতে লাখ লাখ টাকা লাগে। কিন্তু আমার ছেলের চাকরি পাওয়ায় এখন সেই শোনা কথা গল্প মনে হচ্ছে। ১৩০ টাকা ছাড়া কাউকে এক টাকাও দেই নাই। 

তিনি আরও বলেন, 'গত বছরও পুলিশের চাকরির জন্য চেষ্টা করছিল কিন্তু হয় নাই। এবার লিখিত পরীক্ষা, ভাইভা পরীক্ষায় পাশ করে যোগ্যতা দিয়ে চাকরি পাইছে। আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া। আমার ছেলের জন্য দোয়া চাই।'

পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন  বলেন, ‘একদম নিরপেক্ষভাবে আমরা নিয়োগ সম্পন্ন করেছি। সবাই মেধা ও যোগ্যতা দিয়েই চাকরি পেয়েছে। ফলাফল ঘোষণা করার পর সদর থানার ওসির মাধ্যমে আমি রিপনের ছেলের চাকরির সংবাদ পাই। শুধু দেলোয়ার না, আজ চাকরির জন্য নির্বাচিত ১৯ জনের মধ্যে বেশিরভাগই খুব সাধারণ ঘরের ছেলে মেয়ে।’

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে মৌলভীবাজার পুলিশ লাইন্স ড্রিল শেডে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ১৯ জনের নাম ঘোষণা করেন নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি এবং মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ সুপার  এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন। 

নির্বাচিত ১৯ জনের মধ্যে উপজাতি কোটায় ১ জন এবং সাধারণ কোটায় ১৮ জন। এদের মধ্যে নারী ৩ জন এবং পুরুষ ১৬ জন। 

জুড়ীরসময়/ডেস্ক/হোসাইন