জুড়ীতে বাড়ির লোকজনকে কুপিয়ে ডাকাতি, স্থানীয়রা বলছে পরিকল্পিত

জুড়ীতে বাড়ির লোকজনকে কুপিয়ে ডাকাতি, স্থানীয়রা বলছে পরিকল্পিত


নিজস্ব প্রতিবেদক::

মৌলভীবাজারের জুড়ীতে গভীর রাতে দরজা ভেঙ্গে বাড়িতে ঢুকে কাতার প্রবাসীসহ একই পরিবারের ৩ সদস্যকে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরিবারের দাবী এরা ডাকাত ছিলো। 

বুধবার (২৬ মার্চ) রাত ৩ টায় পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের পূর্ব গোয়ালবাড়ী হালগরা গ্রামের মরহুম আব্দুল খালিক মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, সেহরির সময় হঠাৎ করে বাড়ির পেছনের একটি দরজা ভেঙে বাড়িতে ডুকে পড়ে দুর্বৃত্তরা। এ-সময় অস্ত্রের সম্মুখীন করে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র লুটে নেয় তারা৷ বাঁধা দিতে গেলে বাড়ির লোকজনের উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ চালায়। আহতরা হলেন আবদুল মোতালিব (৩৬), তাঁর স্ত্রী রোকসানা বেগম (৩০) ও ভাই আবদুল আজিজ (২৬)। তাঁদের মধ্যে মোতালিব কাতারপ্রবাসী। সম্প্রতি তিনি দেশে এসেছেন। ২/১ দিনের মধ্যে কাতারে যাওয়ার কথা। 

পরিবারের সদস্যরা জানান, গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে ছয় সদস্যের একদল দুর্বৃত্ত তাঁদের বসতঘরের পেছনের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকে। এর মধ্যে একজনের মুখোশ পরা ছিল। তাদের হাতে ছিল বিভিন্ন ধরনের দেশি অস্ত্র। সাহ্‌রির জন্য ওই সময় পরিবারের কয়েকজন সদস্য জেগে ছিলেন। একপর্যায়ে দুর্বৃত্তরা ‘মামলার সাধ মিটাইমু’ বলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রথমে মোতালিবকে কোপ দেয়। স্বামীকে রক্ষা করতে গেলে তারা রোকসানাকেও কুপিয়ে জখম করে। এ সময় ‘আর মামলা করলে জানে শেষ করি দিমু’ বলেও তারা হুমকি দেয়। এরপর পাশের কক্ষে গিয়ে আবদুল আজিজকেও কুপিয়ে আহত করে তারা। পরে তারা বিভিন্ন কক্ষের আলমারি ও ড্রয়ার ভেঙে প্রায় এক লাখ টাকা, ১০ ভরির মতো স্বর্ণালংকার, ৫টি দামি মুঠোফোন ও ঈদ উপলক্ষে কেনা নতুন জামাকাপড় লুট করে নিয়ে যায়।

এতে তাৎক্ষণিক এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলেও খোজ মেলেনি দুর্বৃত্তকারীদের। আহতাবস্থায় তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেলে প্রেরণ করেন।

স্থানীয় একজনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, তাদের চাচার সাথে পারিবারিক দ্বন্দ্ব সম্পর্কে এলাকার অনেকে জানেন। আহতদের আগেও বার বার মামলায় ফাঁসানোও হয়েছিল।

পূর্বজুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রুহেল উদ্দিন বলেন, এই ঘটনাটিকে পরিকল্পিত বলা যায়। দীর্ঘদিন থেকে রাস্তা নিয়ে তাদের পারিবারিক একটি ঝামেলা চলছিল, এর মধ্যে বহুবার হুমকিও পেয়েছে তারা। এতে ওই বাড়ির পাহারাদারকে আটক করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে আরও তথ্য জানা যাবে।

জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদুল আলম ভূঁইয়া জানান, আমরা এ বিষয়ে তদন্ত করছি। বাড়ির লোকজন আহত থাকায় এখনও মামলা করেননি কেউ, তবে তদন্ত প্রক্রিয়াধীন।

জুড়ীরসময়/ডেস্ক/হোসাইন