সহিদুর রহমান পাবেল
ভোরের কুয়াশায় আগমনী বার্তা
কার্তিক মাসে চলে ফসল তোলার চর্চা
অগ্রহায়ন মাসে হয় উৎসব নবান্ন
সোনালী ধানে গোলাভরা অন্ন।
কৃত্তিকা আর্দ্রা দুটি তারার নাম করে অনুসরণ
নাম রাখা হয়েছে কার্তিক ও অগ্রহায়ণ।
অগ্র’ ও ‘হায়ণ’ এ দু’অংশের অর্থ গ্রহন
করা হয় ‘ধান’ ও ‘কাটার মৌসুম' তেমন।
হেমন্ত থেকে বছর শুরুর,
ঘোষণা করেছিল বাদশা আকবর,
কৃষক ঘরে ফসল তোলার পর
আদায় করা হত খাজনা আর কর।
এখন নেই সেই বাদশাহী নেই রাজ্য,
তবুও আছে চমৎকার ঋতু নাতিশীতোষ্ণ,
গ্রীষ্ম বর্ষার পরে ধরণী যখন হয়েছে শান্ত,
বুঝে নিতে হবে তখন আসছে হেমন্ত।
হেমন্ত ঋতুতে ফোটে গন্ধরাজ, মল্লিকা, দেব-কাঞ্চন,
হিমঝুরি, শিউলি, কামিনী ফুলে প্রফুল্ল হয় মন,
রাজ, অশোক, ছাতিম ও বকফুলের ঘ্রান
এই ঋতুতে আরো হয় আউশ আমন ধান।
কামরাঙা ও চালতা হেমন্তের দুটি বিশিষ্ট ফল,
এ ঋতুর প্রধান ফল কিন্তু ডাব নারিকেল,
নারিকেলের রকমারি মুখরোচক পিঠার বাহার,
মা বোন, স্ত্রীর রাত জেগে তৈরী এ পিঠা প্রিয় সবার।
বাংলাদেশের কোন কোন অঞ্চলে,
ফসল তোলার পরদিনই নতুন চালে
ফিরনি-পায়েশ অথবা ক্ষীর তৈরি চলে
আত্মীয় পাড়া-প্রতিবেশী খায় দলে দলে।
নবান্নে জামাইকে নিমন্ত্রণ করা সবার তো জানা,
মেয়েকেও বাপের বাড়িতে ‘নাইওর’ হয় আনা।
আবহমান বাংলার দেশীয় নৃত্য সাথে গান-বাজনা,
লাঠিখেলা, নাগরদোলা দেখেতে যায় নাতি আর নানা।
হেমন্ত তুমি বৈচিত্র্যময়, তুমি মনোরম,
তোমার মধ্যে রয়েছে মিশ্রন, শীত ও গরম।
এই প্রকৃতির রুপ-যৌবন নষ্ট করছি আমরা,
আমাদের নেইকো লজ্জা শরম।
লেখক: সহিদুর রহমান পাবেল, কবি ও এএসআই বাংলাদেশ পুলিশ।
জুড়ীরসময়/ডেস্ক/হোসাইন