নিজস্ব প্রতিবেদক::
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় মৃত ব্যক্তি ও প্রবাসীদের আসামী করা হয়েছে। পুলিশের করা মামলায় মৃত ব্যক্তি ও প্রবাসীকে আসামী করায় উপজেলা জুড়ে তৈরী হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার।
বুধবার (০৫ জুলাই) জুড়ীতে শেখ হাসিনা সরকারের গুম, খুন ও নির্যাতনের প্রতিবাদে মিছিল করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দলগুলো। মিছিলের পর পুলিশ ২৮ জনের নামোল্লেখসহ আরও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের উপর মামলা করে।
মামলার লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জামায়াত-শিবির ও বিএনপি কর্মীরা জনসাধারণের যান চলাচল বন্ধ ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করার জন্য উত্তেজিত হইয়া মিছিল রাস্তায় বের করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। পুলিশের বাধা অমান্য করে তারা মিছিল দিতে শুরু করে। পরে নেতাকর্মীরা পুলিশকে উদ্দেশ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়ে সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করে।
এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার (০৬ জুলাই) পুলিশ বাদি হয়ে জুড়ী থানায় একটি মামলা (মামলা নং-৮৭) করে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মামলার এজাহারের ১১ নং আসামী লোকমান হোসেন মারা যান ২০১৭ সালের ৪ আগস্ট। তিনি উপজেলার হাসনাবাদ গ্রামের হাজী রুমুজ আলীর ছেলে। এমামলায় ৬ নং আসামী করা হয় মো. রাহিদ আলীকে। তিনি গত ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। রাহিদ আলী কুলাউড়া উপজেলার হরিপুর গ্রামের মশাহিদ আলীর ছেলে। ফুলতলা ইউনিয়নের রজব উদ্দীনের ছেলে বুরহান উদ্দীন দুই বছর থেকে আরব আমিরাতে অবস্থান করছেন। মামলায় বুরহানকে ২৩ নং আসামী করা হয়েছে। ফুলতলা বাজারের ইব্রাহীম আলীর ছেলে নাঈম উদ্দীন ২ বছর আগে ফ্রান্সে পাড়ি জমান। তাকেও পুলিশের করা এই মামলায় ২৪ নং আসামী করা হয়েছে।
প্রবাসী রাহিদ আলীর বড় ভাই মো: আলী ইমন বলেন, আমার ভাই ফেব্রুয়ারি মাস থেকে প্রবাসে আছে। সে প্রবাসে থেকেও পুলিশি মামলার আসামী। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে এই মামলা দেওয়া হয়েছে।
মামলার ১১ নং আসামী মৃত লোকমান হোসেনের ভাতিজা ঢাকা জজ কোর্টের শিক্ষানবীস আইনজীবি কামরুজ্জামান বলেন, আমার চাচা মারা যাবার পর তিনি কিভাবে বৃহস্পতিবার জুড়ীর মিছিলে গেলেন? একজন মৃত ব্যক্তিকে পুলিশের করা মামলায় আসামী করা হল। আসলে এই বিষয়টি অত্যান্ত হতাশাজনক এবং আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন।
মৃত ব্যক্তি ও প্রবাসীরা আসামী হওয়ার বিষয়ে জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, এরকম কিছু হয়ে থাকলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।
জুড়ীরসময়/ডেস্ক/এএ