জলবায়ু পরিবর্তনে বাস্তুচ্যুতদের টেকসই জীবিকার কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে কাজ করছে সরকার - পরিবেশমন্ত্রী

জলবায়ু পরিবর্তনে বাস্তুচ্যুতদের টেকসই জীবিকার কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে কাজ করছে সরকার - পরিবেশমন্ত্রী


স্টাফ রিপোর্টার::

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে স্থানীয় জীবন-জীবিকার ওপর প্রভাব এবং কোন কোন প্রেক্ষাপটে ক্ষতিগ্রস্থ জনগোষ্ঠী দূরবর্তী এলাকায় অভিগমন করে সে বিষয়ে জানতে গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পের আওতায় গবেষণালব্ধ জ্ঞান, স্থানীয় অর্থনৈতিক ভিত্তি এবং স্থানীয়ভাবে অভিযোজনের সুযোগ করে এমন একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। এ প্রকল্পে প্রাপ্ত সুপারিশের মাধ্যমে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। উক্ত গবেষণা কার্যক্রমের ফলাফল জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় অবদান রাখবে। 

রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের মিলনায়তনে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বাস্তবায়িত “জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বাস্তুচ্যুতদের স্থানীয়ভাবে অভিযোজনের জন্য টেকসই জীবিকার কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবেলায় বর্তমান সরকার  জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। এ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য এ পর্যন্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট কর্তৃক মোট ৮শত ৫১টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। স্থানীয় জনগণ সামাজিকভাবে এর সুফল ভোগ করছে। গৃহীত এসব প্রকল্পের মধ্যে তিনটি প্রকল্প জাতীয় পর্যায়ে ও একটি প্রকল্প আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পুরস্কার লাভ করেছে।

 মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে বদলে যাচ্ছে দেশের ভৌগলিক চিত্র, ক্রমশ ঝুঁকির মুখে পড়ছে উপকূলীয় অঞ্চল ও নদীকেন্দ্রিক জীবিকা। ২০১৮ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী নদী ভাঙনের কবলে পড়ে প্রতি ১০০ জনে ১.৬ জন পুরুষ ও ০.৯ জন নারী শহরমুখী হচ্ছে। সপরিবারে শহরমুখী হওয়ার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।  প্রতিনিয়ত নগরায়ণ, কৃষিজমিতে শিল্পায়ন, উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মাটিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে ক্রমশ কমছে কৃষিকাজ। যে কারণে এই পেশার সাথে সম্পৃক্ত বিশাল একটি অংশ দ্রুত শহরমুখী হচ্ছে জীবিকার তাগিদে। শহরমুখী এ অভিগমন রোধ করে স্থানীয়ভাবে তাদের জীবিকার ব্যবস্থা গ্রহণে সরকার কাজ করবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর মোঃ আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে  বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুন নাহার হেনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোঃ শহীদুল ইসলাম, প্রকল্প পরিচালক ও ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. নুরুল ইসলাম নাজেম প্রমুখ। প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত ফলাফল উপস্থাপন করেন ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর হুমায়ুন কবির। এছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক এবং সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

জুড়ীরসময়/বিজ্ঞপ্তি/সাইফ