ফুলতলা ইউপি নির্বাচন: চলছে ত্রিপাক্ষিক লড়াই

ফুলতলা ইউপি নির্বাচন; চলছে ত্রিপাক্ষিক লড়াই


আফিফুর রহমান::

প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে ২৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার অনুষ্টিত হবে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন

কয়েক বছর পূর্বে মামলাজনিত জটিলতায় নির্দিষ্ট সময় থেকে পিছিয়ে পড়ে সীমান্তবর্তী এই ইউনিয়নের নির্বাচন।সেই প্রেক্ষিতে পুরো জেলার মধ্যে এই একটি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্টিত হচ্ছে আগামি ২৯ডিসেম্বর।

জানা যায়, ৯টি ওয়ার্ডের সমন্বয়ে গঠিত ৭ হাজার ৩৬৪ একর আয়তনের এলাকাটিতে ১৩ হাজার ৩৫৬ জন ভোটার রয়েছেন।

সর্বমোট ১১টি ভোটকেন্দ্রে অনুষ্টিত হবে সাধারণ এই নির্বাচন। যেখানে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন এবং সদস্য পদে ৩২ জন পুরুষ ও সংরক্ষিত মহিলা আসনে ১১জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন।

সরেজমিন ইউনিয়ন জুড়ে দেখা যায়, প্রচার-প্রচারণায় পোস্টার-ব্যানারে পুরো ইউনিয়ন ছেয়ে গেছে। এলাকায় নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের মধ্যে চলছে উৎসবমুখর পরিবেশ। বাজারে গণজমায়েতের পাশাপাশি চায়ের দোকানে নির্বাচন কেন্দ্রিক গল্পবাজি চলছে দেদারসে। যার যার পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে ভোটার-সমর্থকরা মাঠপর্যায়ে সক্রিয় থেকে একীভূত হয়ে কাজ করে চলছেন।

চা বাগান অধ্যুষিত এই ইউনিয়নটিতে সর্বোচ্ছ ভোটার রয়েছেন রাজকী বাগানে।এই বাগানটিকে ভোট ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচনা করা হয় অর্থাৎ এখান থেকে যে প্রার্থী একচেটিয়াভাবে অধিক ভোট পাবেন তিনিই নির্বাচিত হবেন বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়।

তিন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর মধ্যে, প্রাক্তন ৫ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মাসুক আহমদ মাসুক (নৌকা), আ'লীগ বিদ্রোহী আব্দুল আলিম সেলু (ঘোড়া) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তফা মিয়া (আনারস) প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘোড়া প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী প্রবাসী আব্দুল আলিম সেলু ইউনিয়টির প্রাক্তন চেয়ারম্যান মরহুম ফয়াজ আলী সাহেবের পুত্র।

জানা যায়, সর্বশেষ নির্বাচনে ১২০০ভোটের ব্যবধানে মাসুক আহমদ ঘোড়া প্রতীকের ফয়াজ আলীকে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছিলেন। সেই নির্বাচনে ফয়াজ আলীর ভোট সংখ্যা ছিল ৩৮৭২ এবং মাসুক আহমদ পেয়েছিলেন ৫০৭২টি ভোট।

অপরদিকে, আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোস্তফা মিয়া পরিষদটির দুই বারের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। তিনি ইতোপূর্বে একবার চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে পরাজয় বরণ করেন।

বাগান ও বস্তিবাসীর প্রতি কোন বৈষম্যের দৃষ্টি না রেখে সবাইকে সমভাবে দেখার প্রতিশ্রুতি রেখে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তফা মিয়া বলেন, আমি নির্বাচিত হলে আমার প্রাপ্ত সম্মানী ভাতা সমাজের অসহায়দের কল্যাণে ব্যয় করব। তাছাড়া বিগত সময়ে জনগণের সুষ্ট বিচারব্যবস্থা ও নাগরিক সুবিধা হতে বঞ্চিত হওয়ার বিস্তর অভিযোগ রেখে তিনি বলেন, আমাকে নির্বাচিত করলে সবাইকে উপযুক্ত সেবা প্রদান করব।

আব্দুল আলিম সেলু বলেন, সামগ্রীক দিক বিবেচনায় ভোটের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি শঙ্কিত।

তিনি আরও বলেন, সুষ্ট নির্বাচন অনুষ্টিত হওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগছি।নৌকার সমর্থকরা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে অল্প ভোট পেলে তাঁরা নির্বাচিত হয়ে যাবে।আমি আশাবাদী নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্টিত হলে বিপুল ভোটে জয়লাভ করব।

এ বিষয়ে নৌকার প্রার্থী মাসুক আহমদ বলেন, ইভিএম যদি পাশ করিয়ে দিতো তাহলে সকাল ৮টা হতে রাত ১০টা পর্যন্ত গণসংযোগের কোন প্রয়োজন ছিলো না আমাদের।

তিনি দাবী করেন, ভিত্তিহীন উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য বাজে প্রলাপ বকছে প্রতিপক্ষরা।

তিনি আরও বলেন,আমরা আশাবাদী ও অগাধ বিশ্বাস রাখি বরাবরের মতো এবারও বিপুল ভোটে জনগণের রায়ে নির্বাচিত হব।

জুড়ীরসময়/আফিফ/সাইফ