জুড়ীতে ওসির যোগদানের পর ১০ দোকানে চুরি

 

জুড়ীতে ওসির যোগদানের পর ১০ দোকানে চুরি

প্রতিকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক::

মৌলভীবাজারের জুড়ীতে নতুন ওসির যোগদানের পর দুই রাতে ১০ দোকানে চুরির ঘটনা ঘটেছে। চুরির ঘটনায় উপজেলার ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

শুক্রবার (২১ অক্টোবর) গভীর রাতে উপজেলার পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের নয়াবাজার, বড়ধামাই, পশ্চিম বড়ধামাই এলাকার   ৫ টি দোকানে চুরি হয়েছে। এ চুরির ঘটনায় খোদ ব্যবসায়ী কে আটকের চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে ওসির বিরুদ্ধে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, গতরাতে উপজেলার পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের  নয়াবাজার, বড়ধামাই, পশ্চিম বড়ধামাই এলাকার  ৫ টি দোকানে চুরি হয়। দোকান গুলো হলো হীরা ভেরাইটিজ স্টোর, আলিম ট্রেডার্স, ফখরুল ভেরাইটিজ স্টোর, ইনসাফ ভেরাইটিস স্টোর, কয়েস স্টোর সহ  শাপলা কমিউনিটি সেন্টারে চুরির ঘটনা ঘটে। ঘটনার খবর পেয়ে জুড়ী থানার ওসি মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির জন্য এসব চুরি হচ্ছে বলে উল্টো দোকানদারকে আটকের চেষ্টা করলে পরিস্থিতি অশান্ত হয়। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

ব্যবসায়ী হীরা দাস বলেন, আমার দোকানে চুরি হয়েছে। ওসি স্যার উল্টো আমি রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির জন্য এসব করছি  অভিযোগ এনে আমাকে আটক করে গাড়িতে নিয়ে তুলেন।

নয়াবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি কাজল আহমদ বলেন, আমাদের বাজারে চুরি হয়েছে আমরা সবাই মর্মাহত । ওসি সাহেব তদন্তে এসে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হীরা দাসকে ষড়যন্ত্রকারী উল্লেখ করে আটক করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান সহ আমাদের সকলের হস্তক্ষেপে তিনি হীরা দাসকে ছেড়ে দেন।

এর আগে মঙ্গলবার ভোর রাতের দিকে উপজেলার ভবানীগঞ্জ বাজারের ৫টি দোকানসহ মসজিদের একটি দানবাক্স চুরি হয়। দোকানগুলো হলো মেসার্স বিসমিল্লাহ ভেরাইটিজ স্টোর, লাভলী স্টোর,শামীম ট্রাভেলস, সুভাষ মিষ্টি ঘর, এমএ নূর রড সিমেন্টের দোকান ও ভবানীগঞ্জ বাজার জামে মসজিদের দানবক্স।

এম এ নূর রড সিমেন্টের দোকানের স্বত্বাধিকারী ও ভবানীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির আহবায়ক এম এ মহসিন মুহিন জানান, রাতে দোকানের তালা ভেঙ্গে চুর ক্যাশের টাকা চুরি করে নিয়ে গেছে। টাকা ছাড়া আর কোন মালামাল নেয়নি। এ ধরনের চুরির ঘটনায় ব্যবসায়ীর আতঙ্কে আছেন।

স্থানীয় পূর্বজুড়ী ইউনিয়ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওবায়দুল ইসলাম রুয়েল বলেন, চুরির বিষয়টিকে রাজনৈতিক আখ্যা দিয়ে ওসি দায় এড়াতে পারেন না। ভিডিও ফুটেজ থাকার পরও জুড়ী শহরে চুরির ঘটনায় এখনো পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। আর আজকে চুরির ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ দেখার পরও তিনি এটাকে ব্যবসায়ীদের ষড়যন্ত্র দাবি করে তাদেরকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পরে আমার হস্তক্ষেপে তিনি ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেন এবং দুজন কর্মচারী ও চৌকিদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যান। 

চেয়ারম্যান বলেন, ওসি সাহেব সিভিল ড্রেসে চুরির ঘটনা তদন্তে এসে খোদ ব্যবসায়ীদেরকে আটক করার চেষ্টা করলে জনতার রুষানলে পড়েন। আমি না থাকলে অপ্রীতিকর কিছু একটা ঘটে যেতো।

জুড়ী থানার ওসি মোশাররফ হোসেন বলেন, জুড়ী বাজারে আমি আসার আগে চুরির ঘটনা ঘটে। নয়াবাজারে চুরির ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আসলে এখানে তেমন উল্লেখযোগ্য কোন চুরির  ঘটনা ঘটেনি। তবে  তিন-চারটি দোকানের তালা ভাঙ্গা ছিল।

ওসি বলেন, কোন ব্যক্তি আমাকে ঘায়েল করতে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে। একপর্যায়ে তিনি বলেন, অনেক লম্বা স্টোরি তো আপনি থানায় আসেন চা খেয়ে আলোচনা করি। এই কথা বলে ফোনের লাইন কেটে দেন।

এব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ সুপার মোঃ জাকারিয়া বলেন, জুড়ীতে বেশ কিছু চুরির ঘটনার বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। তবে নয়াবাজারের চুরির ঘটনায় ব্যবসায়ী কে ওসি কতৃক উঠিয়ে আনার বিষয়টি খোঁজ নিবেন বলে জানিয়েছেন।

জুড়ীরসময়/ডেস্ক/হোসাইন