মাছুম রেজার বিরুদ্ধে প্রকল্পের টাকা আত্নসাতের প্রমাণ পায়নি তদন্ত কমিটি

 


নিজস্ব প্রতিবেদক:

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাছুম রেজার বিরুদ্ধে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ অভিযোগের প্রমাণ পায়নি তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনে রাবার ড্যাম পরিচালনায় একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনাও জমা দিয়েছে।

জানা যায়, হাবিবুর রহমান নামের জনৈক ব্যক্তি পিতৃপরিচয় গোপন করে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন উপজেলার বেলাগাঁও রাবার ড্যামের পলি অপসারণ ও সংস্কারের নামে জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা উত্তোলনের জন্য ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলামকে প্রজেক্ট চেয়ারম্যান করে কমিটি দাখিল করেছেন। এতে আরও উল্লেখ করা হয় বিগত দুই বছর থেকে রাবার ড্যামে কোনো পলি অপসারণ ও সংস্কার কাজ হয়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা মো. মনসুর আলী, উপজেলা সমবায় অফিসার আমিরুল ইসলাম ও উপজেলা  কৃষি অফিসার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনকে সদস্য করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। তদন্ত কমিটি গত ৪ এপ্রিল রাবার ড্যাম এলাকা পরিদর্শন করে অভিযোগকারীর পূর্ণ ঠিকানা স্পষ্ট না থাকায় অভিযোগকারীকে খুঁজে  পাননি। অভিযোগকারীর অনুপস্থিতিতেই তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে। তদন্ত কমিটি উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের সাথে আলাপ-আলোচনা করে জানতে পারেন, প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও রাবার ড্যামের পলি অপসারণ ও সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করে রাবার ড্যাম চালু করা হয়। 

ইউপি চেয়ারম্যান মাছুম রেজার ঘনিষ্ঠজন জানান, একটি কুচক্রী মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। কুচক্রী মহলটি প্রশাসনিক দপ্তরকে কাজে লাগিয়ে সংবাদপত্র ও বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের মধ্যে দিয়ে তার সুনাম ক্ষুন্নের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। 

এ নিয়ে চেয়ারম্যানের সমর্থক ও এলাকাবাসীর মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জুড়ী উপজেলায় জনপ্রিয় চেয়ারম্যান মাছুম রেজা একজন সৎ ও ন্যায় পরায়ণ ব্যক্তি হিসেবে সু-পরিচিত বলে জানান তার সমর্থকরা। 

স্থানীয় কালীনগর এলাকার তারেক আজিজ বলেন, বর্তমানে জুড়ীবাসীর একজন যোগ্য অভিভাবক হিসেবে মাছুম রেজা পরিচিত। এমন একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দেয়া প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের মতো একটি গ্ররুত্বপূর্ণ অভিযোগের অভিযোগকারীকেই খুজেঁ পাননি উপজেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি। 

চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত শেখ মো. আবু বকর বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে তদন্ত কমিটি সরজমিনে উপস্থিত স্বাক্ষীগণের স্বাক্ষ্য গ্রহন, প্রকল্পের খরচের বাস্তবতা ইত্যাদি খুঁজে পেয়েছেন। শুধু মাত্র সংবাদপত্রে রিপোর্ট প্রকাশ করাই ছিল ঐ অভিযোগকারীর উদ্দেশ্য। 

জায়ফরনগর ইউনিয়নের প্যানেল ও রাবার ড্যাম প্রকল্প চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, হাবিবুর রহমান নামে পিতৃপরিচয় গোপন করে যে ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন তার অভিযোগ মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরাজিতরা সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে একের পর এক মিথ্যা  অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কোন অভিযোগেরই ভিত্তি নাই।  

তিনি বলেন, নাম ঠিকানাসহ অনেক অভিযোগের আইনত কোনো ব্যবস্থা উপজেলা প্রশাসন গ্রহণ করে না। আর ঠিকানাবিহীন চক্রান্তমূলক একটি ভূয়া অভিযোগের তদন্তের রহস্য বুঝতে পারলাম  না। 

তিনি আরও বলেন, জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাছুম রেজার সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য আমাকে জড়িয়ে এমন অভিযোগ করা হয়েছে বলে আমি মনে করি।

তদন্ত কমিটির সদস্য ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেন, যে অভিযোগটি এসেছে এটির প্রমাণ পাওয়া যায় নি। যেহেতু এই ড্যামের মাধ্যমে দুটি ইউনিয়নের হাজার হাজার হেক্টর জমি চাষ হয়। তাই আমরা তদন্ত প্রতিবেদনে একটি সুপারিশ করেছি রাবার ড্যাম সমবায় সমিতির একটি শক্ত  কমিটি দরকার। যেহেতু বর্তমান কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে।  এই কমিটি রাবার ড্যামের পলি অপসারণ সহ উন্নয়ন কাজ পরিচালনা করবে। এবং তাদের তহবিলও দরকার।

জুড়ীরসময়/ডেস্ক/এএ