মরে যাচ্ছে জুড়ী নদী, নজরদারি নেই প্রশাসনের!

মরে যাচ্ছে জুড়ী নদী, নজরদারি নেই প্রশাসনের!


বিশেষ প্রতিবেদক::

জুড়ী নদীতে ময়লা-আবর্জনা, পলিথিন, প্লাস্টিক সামগ্রী, পচা-বাসী খাবারের উচ্ছিষ্ট ফেলে এই নদীকে মেরে ফেলছে স্থানীয়রা। এসব বর্জ্য নদীর পানির সঙ্গে গিয়ে পড়ে দেশের সর্ববৃহৎ হাকালুকি হাওরে। এর মাধ্যমে হাওর, নদী ও আশপাশের পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, জুড়ীর কামিনীগঞ্জ ও ভবানীগঞ্জ বাজার এলাকার ব্যবসায়ীরা পচা ফল, সবজি, মাছ ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের উচ্ছিষ্ট, পরিত্যক্ত ময়লা-আবর্জনা ও মানুষের পয়োঃবর্জ্য জুড়ী নদীর তীরে ফেলে দূষণ করছে। এসব এলাকায় প্রকাশ্যে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। নদীতে ফেলা আবর্জনার স্তূপের মধ্যে ছিল পচা-বাসি খাবার, পলিথিন, দইয়ের পাত্র, মিষ্টির কার্টুন, ডিমের খোসা, বোতলসহ বিভিন্ন বর্জ্য। নদীর ওপরে থাকা বেইলি সেতুর ওপর দিয়ে সাধারণ মানুষসহ গাড়িচালকদের প্রতিনিয়ত যাতায়াত করতে হয় দুর্গন্ধের মধ্য দিয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জুড়ী নদীর উৎপত্তি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি অঞ্চলে। ১৩.৫ কিলোমিটার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তরেখা নির্ধারণ করে প্রবাহিত হয়ে ফুলতলা ইউনিয়ন দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। নদীর বাংলাদেশ অংশের দৈর্ঘ্য প্রায় ৫০ কিলোমিটার। নদীটি হাকালুকি হাওরের মধ্য দিয়ে পশ্চিম দিকে ঘুরে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা হয়ে কুশিয়ারা নদীতে মিলেছে। মৌসুমি প্রকৃতির এ নদীতে বর্ষাকালে প্রচুর পরিমাণে পানি প্রবাহিত হয়।

স্থানীয় পরিবেশকর্মী খোরশেদ আলম জানান, গত বছর শীতে হাকালুকি হাওরে অনেক স্থানে প্লাস্টিক সামগ্রী, কাচের বোতল, পলিথিনসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী দেখা গেছে। এটা হাওরের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যকে বিরাট হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। বাজারে ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গা নির্ধারণ করে দিতে হবে।

পরিবেশ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. বদরুল হুদা বলেন, ‘নদীর পারে দোকানের ময়লা-আবর্জনা ফেলায় কামিনীগঞ্জ ও ভবানীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি-সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হবে।’

জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানা বলেন, ‘নদীর পারে ময়লা-আবর্জনা ফেলা নিয়ে উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনা করেছি। যত্রতত্র ময়লা না ফেলে নির্ধারিত একটি ডাস্টবিনে ফেলার জন্য আলাদা একটি স্থান নির্ধারণ করা হবে। এর পর থেকে কেউ যদি নদীতে ময়লা ফেলে, তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জুড়ীরসময়/এম এস/সাইফ