৪ বছর থেকে ছাত্রী মিলনায়তনেই বসবাস করছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক!

৪ বছর থেকে ছাত্রী মিলনায়তনেই বসবাস করছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক!


নিজস্ব প্রতিবেদক::

স্কুলের কাছাকাছি বাড়ি থাকা সত্ত্বেও স্কুলের ছাত্রী মিলনায়তন দখল করে  রীতিমত সংসার পেতেছেন এক শিক্ষক। মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের শিলুয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান শিক্ষক সেলিম মিয়া‌ বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে প্রায়ই বসবাস করে আসছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পরিবেশ।

এ নিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলেও এতে কর্ণপাত করছেন না এ প্রধান শিক্ষক!

এছাড়া সম্প্রতি শিলুয়া হাই স্কুল এন্ড কলেজে অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগের  বিষয়টি গতমাসে তদন্ত করেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফজলুর রহমান। তদন্তকালে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে প্রধান শিক্ষকের থাকার বিষয়টি তুলে ধরেন অভিভাবকরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্র-ছাত্রীরা জানান, শিলুয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম মিয়া ২০১৮ সাল থেকে ছাত্রী মিলনায়তনের একাংশ দখল করে দুই সন্তানসহ বসবাস করছেন। অপর অংশে আরও দুজন শিক্ষক থাকেন। ফলে মধ্যাহ্ন বিরতিতে ছাত্রদের সঙ্গে শ্রেণি কক্ষেই সময় পার করতে হচ্ছে ছাত্রীদের। বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকরাও উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। দ্রুত ছাত্রী মিলনায়তনটি দখলমুক্ত করে ছাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, একটি বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে মোটামুটি সংসার পেতেছেন বিদ্যালয়ের এ প্রধান শিক্ষক। একদিন নয় দু’দিন নয়, পুরো কয়েকবছর ধরেই তিনি মাঝে মধ্যে বিদ্যালয়ের এ কক্ষে বসবাস করছেন  অথচ পাশের উপজেলায়ই তার বাড়ি আছে। তার কক্ষে রয়েছে একটি খাট, সোফা,আলনাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র।

স্থানীয়রা ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা  জানান, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পরিবেশ নষ্ট হয়।

সাবেক ইউপি সদস্য দিলীপ এিপাঠি বলেন,  বিদ্যালয়ের পাশের উপজেলাতে প্রধান শিক্ষকের বাড়ী। কিন্তু তিনি প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ দখল করে বসবাস করছেন। এতে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে।

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ সেলিম মিয়া বলেন, ছাত্রী মিলনায়নতটি পরিত্যক্ত হওয়ায় স্কুল ও কলেজ পরিচালনা কমিটির রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে তিনিসহ আরও দুজন শিক্ষক জনপ্রতি এক হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে সাময়িকভাবে বসবাস করছেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, প্রতিটি শ্রেণিকক্ষের সঙ্গে ছাত্রী মিলনায়তন রয়েছে। তাদের বসবাসে ছাত্রীদের অসুবিধা হচ্ছে না বলে তিনি দাবি করেন।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফজলুর রহমান জানান, কলেজের ছাত্রী মিলনায়তনকে বাসভবন বানিয়ে শিক্ষকদের বসবাস করার কোনো নিয়ম নাই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জুড়ীরসময়/এমই/সাইফ