বিদায় জুড়ী!

বিদায় জুড়ী! #জুড়িরসময়_bangladesh, #জুড়িরসময় #জুড়ির_সময়_english, #জুড়ির_সময়_epaper, #জুড়ির_সময়_facebook, #জুড়ির_সময়_hd, #জুড়ির_সময়_live, #জুড়ির_সময়_news, #জুড়ির_সময়_online, #জুড়ির_সময়_tv_live, #জুড়ির_সময়_twitter, #জুড়ির_সময়_wikipedia, #জুড়ির_সময়_youtube, #জুড়ির_সময়_টিভি, #জুড়ীর_সময়_bangladesh, #জুড়ীরসময় #জুড়ীর_সময়_english, #জুড়ীর_সময়_epaper, #জুড়ীর_সময়_facebook, #জুড়ীর_সময়_online, #জুড়ীর_সময়_tv, #জুড়ীর_সময়_নিউজ, #জুড়ীর_সময়_সংবাদ, #jurirsomoy, #jurir_somoy_bangla, #jurir_somoy_english, #jurir_somoy_epaper, #jurir_somoy_facebook, #jurir_somoy_fb, #jurir_somoy_kobita, #jurir_somoy_website, #jurir_somoy_wikipedia, #jurir_somoy_youtube, #jurir_shomoy, #jurirsomoy_app, #jurirsomoy_bangla, #jurirsomoy_english,

আল ইমরান রুহুল ইসলাম::

জুড়ীর জীবন জুড়ে প্রাণের মেলা
চায়ের সুবাস মাখা বিদায় বেলা

স্মৃতির নাটাই ছেড়ে ওড়ে ঘুড়ি
বলছে, বিদায়! ওগো প্রিয় জুড়ী।

বিদায়ের দিন ছিল সেদিন! গত বছরের ২১ জুন তারিখে মৌলভীবাজার জেলায় যোগদান করেছিলাম, বছর ঘুরে আবার একই দিনে বেজে ওঠেছিল বিদায়ের ঘণ্টা। এদিনই জুড়ী উপজেলা থেকে বিদায় নিয়েছি অফিসিয়ালি, নবাগতের হাতে তুলে দিয়েছি দায়িত্বভার। এরই মাঝে কিছুটা ঘোরের ভেতরে এক বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে।

এই এক বছর সময় যেন কেটে গিয়েছে দ্রুততম গতিময়তায়। প্রেমিকার চোখে চোখ রেখে যেমন করে সময় কেটে যায় অগোচরে চিত্ত নিমগ্নতায় নিপুণ অনুভবে, তেমনি করেই যেন জুড়ীর জীবন কেটে গেছে অতিদ্রুত। বৈচিত্র্যময় প্রকৃতির সাথে অন্তরঙ্গ আলাপনের জন্য বছরটা ছিলো নাতিদীর্ঘ। ঘড়ির কাটা ধরে ধরে সময়ের হিসেব এখানে মিলেনি।

এই জুড়ীতে আমরা যখন সপরিবারে আসি তখন ইভার প্রেগনেন্সির একেবারে শেষ পর্যায়। ছিল মাত্র এক মাসের অপেক্ষা। এমন একটি সময়ে জুড়ীতে আসাটা ছিল তার জন্য অনেক কঠিন। স্বভাবতই ইচ্ছে ছিল না ওর। তবুও এসেছে সে আমার জন্য, একসাথে আমরা পার করেছি সকল কঠিন সময়। মৌলভীবাজারের একটি হাসপাতালে আমাদের ছোট মেয়ে সানসার জন্ম। জুড়ী উপজেলার পরিবেশে আলো বাতাসে সে কাটিয়েছে জীবনের প্রথম বছর। এভাবেই জুড়ীর মাটির সাথে গড়ে উঠেছে মা ও মেয়ের মাতৃত্বের সম্পর্ক। শেষের দিকে জুড়ী মৌলভীবাজারের পথে বেরোলেই ইভা বলতো, 'আহা! এতো সুন্দর ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করে না।'

গতকাল জুড়ী উপজেলা ছেড়ে সুনামগঞ্জের পথে যখন যাত্রা করেছি, তখন মনে হয়েছে এই সুন্দর জুড়ী আমাকে তখনো টানছে। এখানকার নির্মল প্রকৃতির মাঝে আমি যে মানসিক প্রশান্তি পেয়েছি তা যেন আমাকে বারবার পিছু ডাকছে। জুড়ী নদী ও হাকালুকি হাওর যেন আমাকে জলকেলির আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। চা বাগানের সবুজ পাতাগুলি আমাকে ফিসফিস করে কানে কানে কিছু একটা বলতে চাচ্ছে। 

আমি ফিরে তাকাই পেছন পানে। এইতো কয়েকদিন আগে সপরিবারে ঘুরতে বেড়িয়েছিলাম কোনো এক চা বাগানে, ফেরার পথে জুড়ী বাজারে ঢুকতেই দেখি রাস্তায় আমাদের গাড়ির সামনেই ধীরলয়ে চলছে একটি সিএনজি অটোরিক্সা, পেছনে লিখা- 'এই দেখা শেষ দেখা নয়, আবার দেখা হবে!' আমরা সবাই এটা দেখে হাসলাম, মজা করে বললাম- এটা আমাদের উৎসর্গ করেই লিখেছে হয়তো। বিদায় বেলায় সেই কথাটিই মনে পড়লো আবার, 'এই দেখা শেষ দেখা নয়, আবার দেখা হবে', এখানে আবার ফিরে আসা হবে, হয়তো প্রকৃতির কাছে, মানুষের কাছে, হয়তো পর্যটকের বেশে।

জুড়ীতে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পেয়েছি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ স্থানীয় নাগরিকদের সকলের আন্তরিক সহযোগিতা। অনেকের সাথে তৈরি হয়েছে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক। 

মাননীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী জনাব মোঃ শাহাব উদ্দিন এমপি মহোদয়ের প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা, তিনি আমার উপর আস্থা রেখেছেন, তাঁর অসামান্য আন্তরিকতা পেয়েছি। শ্রদ্ধেয় জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান স্যার ও ভাবী আমাদের যে স্নেহের বাঁধনে আবদ্ধ করেছেন তা আজীবন মনে থাকবে।

তাই, বিদায় বেলায় বলি, ভালো থাকুক জুড়ী,
ভালো থাকুক এখানকার সকল মানুষ।

লেখক: জুড়ী উপজেলার সদ্যবিদায়ী নির্বাহী অফিসার।

জুড়ীরসময়/ডেস্ক/এস