বড়লেখার একটি ইউনিয়ন পরিষদে অগ্নিকাণ্ড, অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি

বিশেষ প্রতিবেদক::

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়ন পরিষদে ভয়াবহ অগিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

রোববার (২৫ এপ্রিল) সকাল আনুমানিক সাড়ে ৯ মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে দমকলবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই আগুনে সেমিপাকা ৫টি কক্ষ, আসবাবপত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ সব নথি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তবে কীভাবে আগুন লেগেছে তা  নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এদিকে খবর পেয়ে দুপুর ২ টার দিকে উপজেলা চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  মো. শামীম আল ইমরান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুসরাত লায়লা নীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

থানা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৯টার দিকে স্থানীয় লোকজন  দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে হঠাৎ ধোঁয়া বের হতে দেখেন। বিষয়টি তারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনাম উদ্দিনকে জানান। পাশাপাশি তারা ফায়ার সার্ভিসেও খবর দেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই মূর্তেই আগুনে  ইউনিয়ন পরিষদের সেমিপাকা ৫টি কক্ষ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।  আগুনে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের কক্ষ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, ডিজিটাল সেন্টার ও গ্রাম আদালতের কক্ষসহ পাঁচটি কক্ষের পাশাপাশি ইউনিয়নের ৫টি কম্পিউটার এবং গুরুত্বপূর্ণ সব নথি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা জানান, ইউনিয়ন পরিষদের সেমিপাকা ৫টি কক্ষ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ভেতরে কম্পিউটার ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথি পুড়ে গেছে। সেগুলো নিচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। স্থানীয় লোকজন ইউনিয়নে ভীড় করেছেন। অনেকেই ইউনিয়নে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিতে এলেও না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। গ্রাম পুলিশের সদস্যরা পুড়ে যাওয়া নথিগুলো নেড়েছেড়ে দেখছেন।

গ্রাম পুলিশ সদস্য  জমির উদ্দিন বলেন, রাতে গ্রাম পুলিশের একজন সদস্য ইউনিয়নে ছিলেন। তিনি সকাল সাড়ে ৭টায় ইউনিয়ন থেকে বাড়িতে যান। এরপরই হয়তো আগুন লেগেছে বলে মনে হচ্ছে। তবে আগুন কিভাবে লেগেছে তা বলা যাচ্ছে  না।

গ্রাম আদালত সহকারী আমজাদ হোসেন পাপলু বলেন, আগুনে গ্রাম আদালতের এজলাসসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল পুড়ে গেছে। অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। তা সহজে কাটিয়ে ওঠা যাবে না।


ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এনাম উদ্দিন বলেন,  ফায়ার সার্ভিস দমকল বাহিনীর সহায়তায় আগুন নিভিয়েছে। আগুন কীভাবে লেগেছে তা ঠিক বলা যাচ্ছে না। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। আগুনে সব কিছু পুড়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

বড়লেখা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার অনুপ কুমার সীংহ রোববার বিকেলে বলেন, খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছি। কীভাবে আগুন লেগেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে বলতে হবে।

বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, সকালে আমি মৌলভীবাজারের যাচ্ছিলাম। এই সময় ইউনিয়ন থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখি। পরে বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানাই। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসেও কল দিয়ে জানাই। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরান বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বলেন, বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানানো হয়েছে। এবিষয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয় ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জুড়ীরসময়/এজেএল/এস