জুড়ীতে ডাক্তার ও নার্সের অবহেলায় মারা গেল শিশুটি


 

বিশেষ প্রতিবেদক::

মৌলভীবাজারের জুড়ীতে ডিউটি ডাক্তার ও নার্সের অবহেলায় এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সোমবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যার পর জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনাটি ঘটে।

হাসপাতাল ও শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা যায়, সোমবার (২৯ মার্চ) সকালে উপজেলার বাছিরপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের সাড়ে তিন মাসের মেয়ে রাইসার নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ দেখা দিলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর থেকেই ডাক্তার ও নার্সদের অবহেলায় শিকার হন শিশুটি। সন্ধ্যার পর শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে শিশুটির বাবা বার নার্স ও ডাক্তারের শরণাপন্ন হলেও তারা কেউ সাড়া দেননি। এতে করে শিশুটির অবস্থা আরো খারাপের দিকে যায়। এক পর্যায়ে রাত আটটায় হাসপাতালেই শিশুটি মারা যায়।শিশুটি মারা যাওয়ার খবরে আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী হাসপাতালে বিক্ষোভ করতে থাকে।

জনসাধারণকে শান্ত করতে জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ সঞ্জয় চক্রবর্তী ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার সমরজিৎ সিংহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা শান্ত হয়।

শিশুটির বাবা সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমার মেয়ে অসুস্থ হলে প্রথমে ডাক্তার অনিক স্যার কে দেখাই। উনার পরামর্শে আমি আমার মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করি। ভর্তির পর থেকে আমি হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের কাছ থেকে কোন চিকিৎসা পাই নি। সারাদিনে একজন  ডাক্তার ও আমার মেয়েকে দেখতে আসেননি। সন্ধ্যার পর আমার মেয়ের অবস্থার অবনতি হলে ডাক্তারের  সাথে যোগাযোগ করেও কোন তাড়া পাওয়া যায়নি।
এতে করে আমার মেয়ের অবস্থা আরোও খারাপের দিকে যায়। এক পর্যায়ে রাত আটটায় হাসপাতালেই আমার মেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। আমি আমার মেয়ে হত্যার সুষ্ঠ বিচার চাই।
হাসপাতালের নার্স দীপা রেবা বলেন, শিশুটির অভিভাবক আমাকে যতবার ডেকেছে আমি ততোবারই শিশুটিকে দেখেছি। সন্ধ্যার পর শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে আমি বার বার অনিক স্যারকে মোবাইলে ফোন দেই, তিনি আমার ফোন রিসিভ করেননি।

একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা যখন চেম্বারে বসে থাকি তখন মোবাইল ব্যবহার করি, তারা যখন ডাকছে তখন আমি সাথে সাথে সেখানে যাই।

এ বিসয়ে ডাঃ প্রিয়জ্যোতি ঘোষ অনিক বলেন, আমি নিয়মিত রোগীকে দেখাশোনা করেছি। রোগীর অবস্থার অবনতির খবর পেয়ে সাথে সাথে রোগীকে দেখতে চাই এবং তার পরিবারকে জেলা সদর হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেই। কিন্তু আর কিছুসময়ের মধ্যেই শিশুটির মৃত্যু হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সমরজিৎ সিংহ বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক আমি হাসপাতালে উপস্থিত হই। এলাকাবাসী এবং শিশুটির আত্মীয়ের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দায়িত্বরত নার্সকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক সরিয়ে নেই এবং ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেই।

জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, শিশু মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালে উত্তেজনা দেখা দিলে আমি সহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য হাসপাতালে হাজির হই। ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

জুড়ীরসময়/ডেস্ক/এস