নিজস্ব প্রতিবেদক::
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ ইউনিয়নের সমনভাগ চা বাগানের ভারতীয় সামীন্তবর্তী পাথারিয়া বনের গহীনে বাঁশ কাটতে গিয়ে নিখোঁজ বাংলাদেশীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার (২২ ডিসেম্বর) সীমান্তের শূন্য রেখা থেকে গোপাল ভাগতি (৩৫) নামের যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সমনভাগ চা বাগানের মোকাম সেকশনের সাবেক ইউপি সদস্য অখিল ভাগতির ছেলে গোপাল ভাগতি বাঁশ কাটতে পাথারিয়া বনের গহীনে যান। এরপর তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে রোববার (২২ ডিসেম্বর) স্থানীয় কিছু চা শ্রমিক সীমান্তের ১৩৯১ ও ১৩৯২ নম্বর মূল সীমান্ত খুঁটির শূন্য রেখার ২০০ গজ অভ্যন্তরে একটি লাশ দেখতে পান। স্থানীয়রা সেখানে গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করেন। পরে সেখানে বিজিবি ও পুলিশের একটি দল সেখানে যায়।
স্বজনরা অভিযোগ করেন, বিএসএফ গুলি করে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে সীমান্তের ওপারে লাশ ফেলে গেছে। তার সাথে থাকা আরো কয়েকজন শ্রমিক পালিয়ে আসায় রক্ষা পায়। স্থানীয় বেলাল মিশুরি জানান, গোপাল বাঁশ আনতে পাহাড়ে গিয়েছিলো। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলো সে। আজ স্থানীয়রা খোঁজ নিয়ে ওই স্থানে তার লাশ পায়। লাশে গুলির চিহ্ন আছে। পুলিশ বিজিবি এসে লাশ নিয়ে গেছে।
বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ইমরান আহমদ জানান, গোপাল সহ আরও কয়েকজন দিনমজুর পাহাড়ে বাঁশ কাটতে যান। এসময় বিএসএফ গুলি করলে গোপাল নিহত হন। ভয়ে তার সঙ্গে থাকা বাকি কয়েকজন সেখান থেকে পালিয়ে এসেছেন।
বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মেহেদী হাসান জানান, রোববার সকালের দিকে কিছু চা বাগান শ্রমিক বিজিবির বিওপির টহল দলকে জানায় যে, সীমান্ত পিলার ১৩৯১/২-এস এর নিকটবর্তী এলাকায় একটি মৃতদেহ পড়ে থাকতে তারা দেখেছেন। সংবাদের ভিত্তিতে বিওসিটিলা বিওপির টহল দল তৎক্ষণিক পুলিশ সহ সেখানে যায়। সেখানে গিয়ে তারা লাশ উদ্ধার করে। পরবর্তী আইনি কার্যক্রম গ্রহণের জন্য মৃতদেহ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের পর নিহতের মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটন করা যাবে।
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল কাইয়ুম জানান, লাশ থানায় পৌঁছেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসাপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।
এদিকে রোববার বিকেলে নিহত গোপাল ভাগতির বাড়িতে খোঁজ খবর এবং শান্তনা জানাতে সমনভাগ চা বাগানে যান মৌলভীবাজার-১ আসন থেকে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুর রহমান, জেলা টিম সদস্য হাফেজ নাজমুল ইসলাম, জামায়াত নেতা মাস্টার আব্দুস সামাদ। এসময় তারা স্বজনদের সাথে কথা বলেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জানান।
জুড়ীরসময়/ডেস্ক/হোসাইন