খালেদ মাসুদ::
জালিমের জিন্দানখানার ভয় উপেক্ষা করে লিখে গিয়েছিলেন দুঃসাহসী কবিতা।মুক্তিকামী জনতার প্রেরণার বাতিঘর হিসেবে যেগুলো কাজ করেছিলো।বাঙালির প্রায় সবটাই তুলে ধরেছিলেন কবিতায়।তাই তো গজল থেকে প্রেমের গান। রণ ঝংকার থেকে মানবতার প্রেম।অসাম্প্রদায়িকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
১৮৯৯ সালের ২৪শে মে ব্রিটিশ ভারতের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন বাংলা সাহিত্য এই কিংবদন্তি। তাঁর পিতা কাজী ফকির আহমদ ছিলেন মসজিদের ইমাম ও মাযারের খাদেম। নজরুলের ডাক নাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। ১৯০৮ সালে পিতার মৃত্যু হলে নজরুল পরিবারের ভরণ-পোষণের জন্য হাজী পালোয়ানের মাযারের সেবক এবং মসজিদে মুয়াজ্জিনের কাজ করেন।
দুঃখ কষ্ট জীবন অতিবাহিত করলেও কবি ছিলেন লেখনিতে সমৃদ্ধ। লিখে গেছেন একেকটি কালজয়ী কবিতা ও গান।তার প্রথম প্রকাশিত গল্প ‘বাউণ্ডেলের আত্মকাহিনি’। এটি মাসিক ‘সওগাত’ (১৯১৮) পত্রিকা (প্রথম বর্ষ, সপ্তম সংখ্যায়-১৩২৬) ১৯১৯ সালের মে মাসে প্রকাশিত হয়।কাজী নজরুল ইসলামের গল্পে ফোটে উঠে কৃষক মজুর জনতার চিত্র।আবহমান বাংলার মাটির গল্প।লাঞ্ছনা বঞ্চনার শিকার এই মাটির জন্য প্রতিবাদী কথা।লিখে গেছেন অতীতের সাথে বর্তমানের কথায় ভবিষ্যতের পরিকল্পনা।
কবিতা মুক্তিকামী মানুষের প্রেরণার বাতিঘর হিসেবে কাজ করেছে। বিদ্রোহী কবিতা লিখে জেলও কেটেছেন।আবার, ১৩২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বের হল নজরুলের ‘দোলনচাঁপা’ কাব্যগ্রন্থ। এই কাব্যগ্রন্থের ১৯টি কবিতা জেলে বসেই নজরুল লেখেন।
যার কবিতায় ভারতের আজাদি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বাদ পাওয়া যায়। পদে পদে আন্দোলনকে গতিশীল করেছে। ভারতীয় উপমহাদেশে কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন প্রথম ব্যক্তি, যিনি লিখিত দলিলের মাধ্যমে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবি উত্থাপন করেছিলেন। কাজী নজরুল তাঁর ‘রুদ্রমঙ্গল’ (১৯২৬)-এ প্রকাশিত ধূমকেতুর পথ রচনায় লিখেছেন, ‘একটিমাত্র টুকরো ভারতীয় ভূমিও বিদেশিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে না।
মুক্তিকামী মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে নজরুল সবসময় অনুপ্রেরণা। মজলুমের শক্তি, জালিমের ভীত কাঁপানোর লেখনী। সাম্য ভালোবাসার সাগর।
লেখক, খালেদ মাসুদ উপ-সাহিত্য সম্পাদক জুড়ীর সময়।
জুড়ীরসময়/ডেস্ক/হোসাইন