লাঠিটিলা সংরক্ষিত বন থেকে লক্ষাধিক টাকার গাছ উধাও

লাঠিটিলা সংরক্ষিত বন থেকে লক্ষাধিক টাকার গাছ উধাও

নিজস্ব প্রতিবেদক::

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী পাহাড় লাঠিটিলা সংরক্ষিত বন থেকে কয়েক লক্ষাধিক টাকার প্রায় ১৫ টি গাছ চুরি হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও আনুমানিক  ২০ থেকে ৩০ টিরও বেশি গাছের গোড়ায় 'রিং' করে কেটে রেখেছে। বনের গলাচিপা ও দশের টিলা নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে দীর্ঘ এক মাসের বেশী সময় পেরিয়ে গেলেও উদাসীন বিট কর্মকর্তা নেননি কোনো পদক্ষেপ।

জানা যায়, সংরক্ষিত বনের গাছ নিধন করতে নতুন একটি কৌশল বেছে নিয়েছে প্রকৃতি চোরেরা। নতুন এই পন্থার নাম ‘রিং' কৌশল। এ কৌশলে প্রথমে গাছের গুড়া কেটে দেওয়া হয়। ফলে ধীরে ধীরে গাছটি শুকিয়ে মারা যায়। গাছটি মারা গেলে সহজে কেটে ফেলা যায়। এ প্রক্রিয়ায় সম্প্রতি উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনের ভেতর থেকে কয়েক লক্ষাধিক টাকার প্রায় ১৫ টি বড় আকারের সেগুন গাছ কেটে চুরি করে নিয়ে গেছে একটি চক্র।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বনের লালছড়া ও জড়িছড়া ফাঁড়ি এলাকার গলাচিপা ও দশের টিলা নামক স্থানের কয়েকটি টিলা ভূমিতে ছোট বড় প্রায় ২৫ - ৩০ টি গাছের গোড়া কেটে 'রিং' করে রাখা। কোন ভাবে প্রমাণ দামাচাপা দিতে কৌশলে গাছগুলোর কাটা অংশ কাদা মাটি দিয়ে গাছের গোড়া ঢেকে রাখা হয়েছে। 

আবার, কয়েকটি গাছের কাটা গুড়া আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি গাছের গুড়া মাটি থেকে তোলে ফেলা হয়েছে। একই এলাকার অন্যপাশে প্রাকৃতিক ভাবে জন্মানো বেশ কয়েকটি গাছ কেটে জ্বালানী কাঠ হিসেবে বিক্রি করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।

লাঠিটিলা বন বিটের দায়িত্বে থাকা বিট কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, যে স্থানে গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে আমার অফিস থেকে ৫-৭ মিনিটের দুরত্ব। রেঞ্জার স্যার সহ জায়গাটি পরিদর্শন করেছি। এ ব্যাপারে ঐ এলাকার মানুষের সাথে মিটিং করেছি। মাস পেরিয়ে গেলেও কেন কোন আইনী ব্যবস্থা নেননি এমন প্রশ্নে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি এ বিট কর্মকর্তা। এসব নিয়ে পত্রিকায় লিখলে মামলার ভয় দেখান তিনি।

জুড়ী রেঞ্জ কর্মকর্তা নাজমুল হুসাইন বলেন, আমি ঢাকায় বন বিভাগের প্রশিক্ষণ শেষে ছুটিতে ছিলাম। আপনাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঐ এলাকা পরিদর্শন করেছি। সেখানে কিছু গাছের কাটা গুড়ি ও নতুন করে কয়েকটি গাছের গুড়ায় রিং করে কাটা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনী প্রদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির  বলেন, বিষয়টি জানা নেই! এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

জুড়ীরসময়/ডেস্ক/হোসাইন