আব্দুল্লাহ আল মাহি::
বছর ঘুরে পঞ্জিকার পাতা উল্টিয়ে হাজির হয়েছে নতুন বছর। নতুন সবকিছুই আমাদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি করে। স্বাভাবিকভাবেই নতুন বছরের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য। নতুন বছর আমাদের স্বপ্ন দেখায়। তাই বছরের শুরুতেই আমাদের মধ্যে জ্ঞান আহরণের স্বপ্ন দেখা শিখতে হবে, যার সবচেয়ে ভালো উপায় বই পড়া।
বই হলো জীবন্ত ইতিহাস, জগতের ভাবনা, অভিজ্ঞতার ঝুলি, জ্ঞানের স্বর্ণখনি, কিংবা সভ্যতার হৃৎস্পন্দন। সাধারণের দৃষ্টিতে কেবলমাত্র কালো কালির অক্ষর দৃশ্যমান হলেও একজন প্রাজ্ঞ ব্যক্তি ঠিক-ই এর মাহাত্ম্য অনুধাবন করতে পারে।
কবিগুরুর ভাষায়, "মহাসমুদ্রের শত বছরের কল্লোল যদি কেউ এমন করে বেঁধে রাখতে পারতো যে, ঘুমিয়ে পড়া শিশুটির মতো চুপ করে থাকতো, তবে সেই নীরব মহাশব্দের সাথে বইয়ের তুলনা হতো।"
বছরের প্রথমেই তাই আমাদের বই পড়ার ধারা শুরু করতে হবে এবং শেষ অবধি এই ধারা চালিয়ে যেতে হবে। যাদের বই পড়ার অভ্যাস আছে তাদের উচিত হবে যেকোনো উপায়ে তা জারি রাখা। আর যাদের বই পড়ার অভ্যাস ঐরকম নাই তাদের এখনই শুরু করা উচিত, এক্ষেত্রে নতুনদের জন্য ফিকশন বই উত্তম হবে বলে আমি মনে করি। প্রতি সপ্তাহে একটি করে বই পড়লেও ৫২টি বই পড়া হয়ে যাবে বছর শেষে ইনশাআল্লাহ। ৫২টি বই পড়া মানে ৫২জন লেখকের চিন্তার জগৎের সাথে পরিচিত হওয়া, ৫২ ধরণের ইতিহাস /দর্শন /কাহিনী সংলাপ /ভ্রমণ কিংবা জ্ঞানের ধারার সাথে পরিচিত হওয়া। যা নিজের জন্য শ্রেষ্ঠ অর্জন হবে নিঃসন্দেহে।
তবে বই পড়ার একমাত্র উদ্দেশ্য জ্ঞান আহরন হওয়া উচিত না। কিছু কিছু বই পড়বো সাহিত্যর রস আহরণের জন্য কিংবা আত্মার খোরাকের জন্য। প্রমথ চৌধুরী যেমনটি বলেছিলেন, "জ্ঞানের ভান্ডার মানেই ধনের ভান্ডার নয় "
পরিশেষে, ২০২৪ হোক বইয়ের, ২৪ হোক জ্ঞান আহরণের। জীবনের শ্রেষ্ঠতম বিনিয়োগ হোক বই পড়ার মাধ্যমে। তবেই তো আমরা সভ্যতার এক অংশ থেকে অন্য অংশে পরিভ্রমণ করতে পারবো, গুণে-মানে নিজেদেরকে শাণিত করতে পারবো।
লেখক: শিক্ষার্থী, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ
জুড়ীরসময়/ডেস্ক/খালেদ