বিশেষ প্রতিবেদক::
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জুড়ী পাবলিক লাইব্রেরীর প্রধান উপদেষ্টা রঞ্জন চন্দ্র দে বলেছেন, আমরা আমাদের সন্তানকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, অফিসার বানিয়ে বলা যাবে না সন্তান মানুষ হয়েছে। সন্তানকে মানুষ করতে হলে ভালো বই পড়াতে হবে। পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি বইয়ের বিশাল জগত রয়েছে। সন্তানকে মোবাইলের বদলে বইয়ের সাগরে ডুবাতে হবে।
তাদেরকে বইমুখী করতে পারলে তার ভবিষ্যত নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না। সে বইয়ের স্বাদ পেলে আর বিপথগামী হবে না। লাইট জ্বললে আলো দিবে। খারাপ বিষয় প্রতিরোধ করতে হলে ভাল পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। আমাদের নষ্ট হওয়া মূল্যবোধ ফিরিয়ে আনতে হবে। ভাল মানুষ না হলে কিছুই টিকবে না। একটা লাইব্রেরী ভালো পরিবেশ তৈরি করে দিতে পারে। তাই লাইব্রেরীকে বাচিয়ে রাখতে হবে। এখানে সময় দিতে হবে।
তিনি মঙ্গলবার রাতে জুড়ী পাবলিক লাইব্রেরী (গণ পাঠাগার) এর নতুন কার্যালয় উদ্বোধনী অনুষ্টানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
বই পড়ার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, চলার পথে অনেক সুন্দর জিনিস দেখা যায়, যা আমাদের আকর্ষন করে। তবে সেটা কিছুক্ষণের জন্য। কিন্তু একটি লাইব্রেরী যদি আকর্ষন করতে পারে সেটা দীর্ঘমেয়াদী হয়। বইকে একবার ভালোবাসলে জীবনে আত্মবিশ্বাসী হবেন।
নেলসন ম্যান্ডেলা ২৭ বছর জেলে ছিলেন, উনার শক্তি ছিল বই। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘদিন জেলে ছিলেন, তারও শক্তি ছিল বই। তিনি জেলের মধ্যে বই পড়ে বই লিখতে শুরু করেন। তার বই গুলো পড়ে আমরা অনুপ্রাণিত হই। যারা বই পড়ে তাদের চিন্তার ক্ষেত্র বড় হয়। কষ্টের মধ্যে থাকলে যে কোনো একটি বই নিয়ে পড়তে বসেন, ভাল লাগবে।
জুড়ী পাবলিক লাইব্রেরীর প্রশংসা করে তিনি বলেন- ১৯৯৫ সালে ইউনিয়ন পর্যায়ে একটি লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেটা দেখে আমি অবাক হই আবার আনন্দিত হই। নতুন কার্যালয়ে লাইব্রেরী অতীতের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে বলে আমি আশাবাদী। লাইব্রেরীর স্থায়ী ভবন নির্মাণ ও সমৃদ্ধির জন্য উপজেলা প্রশাসন সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
জুড়ী পাবলিক লাইব্রেরীর সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা কুলেশ চন্দ্র চন্দ মন্টু’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরে আলম লাল-এর পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিনিয়র সহকারী সচিব রতন কুমার অধিকারী, জুড়ী তৈয়বুন্নেছা খানম সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও জুড়ী পাবলিক লাইব্রেরীর উপদেষ্টা ফরহাদ আহমদ, জুড়ী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রিংকু রঞ্জন দাস, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: মনিরুজ্জামান, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম, হযরত শাহ নিমাত্রা সাগরনাল-ফুলতলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন, সাগরনাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জুড়ী পাবলিক লাইব্রেরীর উপদেষ্টা বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুন নূর মাস্টার, যোদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সহিদ চৌধুরী খুশী।
উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রনজিতা শর্মা, জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জুড়ী পাবলিক লাইব্রেরীর উপদেষ্টা হাজী মাছুম রেজা, গোয়ালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জুড়ী পাবলিক লাইব্রেরীর উপদেষ্টা আব্দুল কাইয়ূম, পূর্বজুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জুড়ী পাবলিক লাইব্রেরীর উপদেষ্টা রুয়েল উদ্দিন, ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জুড়ী পাবলিক লাইব্রেরীর উপদেষ্টা আব্দুল আলীম সেলু, জুড়ী উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কারিগরী প্রশিক্ষক মো: ফারুক আহমদ, লাইব্রেরীর প্রধান উদ্যোক্তা জি. এম বদরুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন লাইব্রেরীর সহ-সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম কাজল।
জুড়ীরসময়/এমএল/জামান