বিশেষ প্রতিবেদক::
বিএনপির এক সময়ের দাপটে নেতা হলেও সময়ের পরিবর্তনে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন জুড়ীর অনেকেই। তবে ক্ষমতাসীন দলে যোগদান করেও ভালো নেই তারা। বিশেষ করে উপজেলা বিএনপির প্রথম সারির সাবেক নেতারা স্থানীয় আওয়ামী লীগে অনেকটা কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছেন।
২০০১ সালে বিএনপি সরকার গঠনের পর জুড়ী উপজেলা বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ছিলেন সালেহ উদ্দিন। ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। তবে ২০১৩ সালের ১ মে স্থানীয় এমপি শাহাব উদ্দিনের হাতে ফুলের মালা দিয়ে বিএনপির ৬০১ জন নেতাকর্মী নিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচন করে জয়ী হন সালেহ উদ্দিন। দলীয় কোনো পদবিতে দায়িত্ব না পেলেও চেয়ারম্যান থাকাকালে বিভিন্ন কর্মসূচিতে স্থানীয় এমপির সঙ্গে থাকতেন। ২০২৩ সালের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হন। তবে নির্বাচনে জিততে পারেননি তিনি। পারিবারিকভাবে শুধু তার বাবা আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন; যিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।তবে তার চাচা ও চাচাতো ভাইয়েরা বিএনপির রাজনীতি করে আসছেন। সালেহ আহমেদের চাচা আছাদ উদ্দিন বটল ছিলেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি। বর্তমানে তার দুই চাচাতো ভাই স্থানীয় যুবদল-ছাত্রদলের দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তাদের মধ্যে আজহার আহমদ ওয়াসিম উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সাব্বির আহমদ মিফতা জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
সালেহ উদ্দিন উপজেলা বিএনপির সভাপতি থাকাকালে ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মুজিবুর রহমান। তিনিও ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তৎকালীন হুইপ শাহাব উদ্দিনের হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন। তবে বর্তমানে তিনি রাজনীতি থেকে অনেকটাই নিষ্ক্রিয়।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জুড়ীতে উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বিএনপির প্রায় দুই হাজার নেতা-কর্মী আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। তাদের বেশির ভাগই বর্তমানে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়।
বিএনপির সাবেক নেতাদের মধ্যে যারা আওয়ামী লীগের কমিটিতে আছেন, তারা দলীয় কার্যক্রমে কিছুটা সক্রিয়। অন্যদিকে পদ-পদবি না পাওয়ায় উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের এক সময়ের দাপটে নেতার অনেকে অভিমান করে রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছা-অবসরে রয়েছেন।
এক সময়ের বিএনপির সভাপতি সালেহ আহমদ বলেন, আমার পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করতেন,এ কারণে আমি বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছিলাম কিন্তু বর্তমানে কোন সভা -সমাবেশে কিংবা দলীয় অনুষ্ঠানে আমাকে ডাকা হয় না। যদি কোন সময় প্রয়োজন মনে করে আমাকে ডাকেন আমি সক্রিয় হবো।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাজী মুজিবুর রহমান বলেন, আমি ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছি, আমি যে উদ্দেশ্যে যোগ দিয়েছিলাম তা ঠিক আছে। বর্তমানে রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও ভালো আছি।উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক মিয়া বলেন, দলীয় কার্যক্রমে অনেকে আসেন না, আমরা ও তাদের ডাকি না। আওয়ামী লীগে যোগ দিলেও তাদের সাথে এক ধরনের দূরত্ব রয়েছে।
জুড়ীরসময়/বেলাল/সাইফ