জুড়ীতে কয়েক দফায় শীলাবৃষ্টি, ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

জুড়ীতে কয়েক দফায় শীলাবৃষ্টি, ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি


নিজস্ব প্রতিবেদক::

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় তৃতীয় দফায় ভারীবর্ষণ ও তুষারের মতো পড়েছে শিলা। সাথে ছিল তীব্র বাতাস ও মুশলধারায় বৃষ্টি । দুপুরে এমন ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে দেশের উত্তর-পূর্বাবঞ্চলের জুড়ীতে। এর আগে  গত সোমবার (২০ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে প্রথম শীলাবৃষ্টি ও ঝড় হয়।


রবিবার (০২ এপ্রিল) দুপুরে দ্বিতীয় দফায় ভারীবর্ষণ ঝড় ও শিলায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে বুরো ধানের ওপর এবার বেশি প্রভাব পড়েছে। সাথে আম, কমলা ও বাতাবিলেবুর খুদে ফল ও কাঠাল সহ অনেক কিছু নষ্ট হয়ে গেছে। সামান্য বৃষ্টি উপকারী হলেও অতিরিক্ত শিলাবৃষ্টিতে কৃষকের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।


এর আগে মঙ্গলবার সারাদিন ভারীবর্ষণ হয়েছে। দুপুরে দ্বিতীয় দফায় জুড়ী উপজেলায় প্রতিটা ইউনিয়নে শীলাবৃষ্টি খবর পাওয়া গেছে। বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত  জুড়ী উপজেলায় বৃষ্টি হয়েছে। এবং বেশ কয়েক জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।


রবিবার সকাল থেকেই মেঘাচ্ছন্ন ছিল। সকাল থেকে ১০ টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মিললেও দুপুর থেকে ছিল আকাঁশ অন্ধকার। জুড়ী উপজেলায় হঠাৎ এমন শীলাবৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গবাদিপশুর খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক বন্যপ্রাণী ও পাখি হয়েছে নীড় ছাড়া।


এ বিষয়ে সোমবার উপজেলার জায়ফনগর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন মনির বলেন, দ্বিতীয় দফায়  সকাল এবং তৃতীয় দফায় রাতে শীলাবর্ষণ। চৈত্র মাসে ব্যাপক শীলাবৃষ্টির কারণে  হাওরের বুরো ধান, গম, ভুট্টা সহ বিভিন্ন সবজি, আম ও লিচুর বেশ ক্ষতি হয়েছে।

লালছড়া এলাকার বাসিন্দা কমলা চাষি জয়নুল মিয়ার সাথে কথা হয়। তিনি জানান, রবিবার সকাল থেকেই আকাশ মেঘলা ছিল। কিন্তু, হঠাৎ করে দুপুর ১২ টা থেকে মুষলধারে বৃষ্টি ও শীলাবৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির সাথে শীলাবর্ষণ হওয়ায় কমলা ও বাতাবিলেবুর খুদে ফল ঝরে গেছে।


লাঠিটিলা গ্রামের বাসিন্দা জয়নুল মিয়া জানান, রবিবার দুপুরের দিকে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে বৃষ্টির সাথে শীলাবৃষ্টি হওয়ায় তরমুজের বেশ ক্ষতি হয়েছে। শীলা বৃষ্টির কারণে সূর্যমুখি, শসা, জিঙ্গা সহ অনেক ধরণের সবজির ক্ষতি হয়েছে।


একই গ্রামের কলা ব্যবসায়ি জলাল মিয়া নামে একজন বলেন, এই এলাকায় আমার অনেক বাড়ীতে অগ্রিম কলা কেনা রয়েছে। ঝড় ও শীলাবৃষ্টির জন্য অনেক কলা গাছ ভেঙ্গে গেছে। এসব পুষিয়ে উঠতে এক বছর সময় লাগবে। এবার লাভের মুখ দেখা হবে না।


উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মো: মনোয়ার হোসেন বলেন, শীলা বৃষ্টিতে বোরো ধানের আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৪ হেক্টর জমি। শাক-সবজিও কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠা যাবে। তবে নতুন করে শীলাবৃষ্টি হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।


জুড়ীরসময়/ডেস্ক/হোসাইন