নিরাপদ পানির কষ্ট!

নিরাপদ পানির কষ্ট!



সাইফুল্লাহ হাসান: 

আজ বিশ্ব পানি দিবস। এখনো মানুষরা খাবার পানির জন্য কি পরিমাণ কষ্ট করে সচক্ষে না দেখলে বিশ্বাসই হবে না। মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের টিলা বেষ্টিত এলাকার মানুষরা এভাবেই প্রতিনিয়ত খাবার পানির জন্য সংগ্রাম করছে। যেটা দেখার কেউ নেই। 

ছবিতে মা ও মেয়ে, তারা দু'জনই ৪ টা পাত্রে করে খাবার পানি আনেন ১/২ কিলোমিটার দূর থেকে। এরপর খাঁড়া খাঁড়া পাহাড় (১০০ ফুট) বেয়ে বাড়িতে পানি নিয়ে পৌঁছেন। এটা প্রতিদিনের চিত্র তাদের। শুধু যে তারা দুজনই তা কিন্তু নয়। এরকম বেশ কয়েকটি এলাকার মানুষ কষ্ট করে আসছে।  

বলা হয় পানির অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না। তৃষ্ণা মিটাতে দরকার সচ্ছ পানি। পানি ছাড়া যে কি পরিমান কষ্ট বাস্তবে তাই উপলব্ধি করে আসলাম এই এলাকা থেকে। 

মাঝেমধ্যে কয়েকটি পরিবারে কূপ বা কুয়া রয়েছে। এগুলো থেকে অনেকে পানি পান করে থাকে। কিন্তু তাও সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ নয়। রোগ হচ্ছে নিশ্চয়ই! সাথে রোগ জীবাণুও ছাড়াচ্ছে। 

নামি-দামি এলাকার মানুষ যদি খাবার পানির জন্য হাহাকার করতে হয়, তাহলে এই এলাকার কর্তাদের লজ্জা হওয়া উচিত। এই এলাকায় না গেলে মানুষের কষ্ট অনুধাবন করা যাবে না। তারা খাবার পানির জন্য প্রতিনিয়তই কষ্ট করে যাচ্ছে। 

কিছুক্ষণ তাদের সাথে কথা বললাম, এই পরিবারগুলোর অনেক ক্ষোভ রয়েছে। তাদের কথা হচ্ছে কোন মতে যদি টিলার নিচেও যদি আমাদের জন্য একটি পানির ব্যবস্থা করে দেয়া হতো তাহলে আমরা উপর থেকে নিচে নেমে পানি সংগ্রহ করতাম। কিছুটা কষ্ট দূর হতো। কিন্তু মেম্বার চেয়ারম্যানদেরকে বলার পরও আমাদের জন্য কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। সত্যিই এসব কথা মানুষরা এমনি এমনিই, বানিয়ে বলছে না। অনেক কষ্টের বিনিময়ে বলছে। 

এই মানুষ গুলোর ভোটে-ই তো মেম্বার, চেয়ারম্যান বানানো হয়। নির্বাচিত হয়ে তারা আরাম আয়েশে দিনাতিপাত করে, অপরদিকে সাধারণ মানুষরা কষ্ট করে যাক আগের মতোই, আমাদের আসে যায় কি? এরকম মনোভাব..! 

এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। যে মানুষরা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলো এই মানুষদের তো হক আছে। তাদের চাওয়া পাওয়া পুরন করুন। কারণ এই মানুষদের অভিশাপের কারণে যাতে নিজের, দেশ ও জাতির কোনো ক্ষতি না হয়।  

লেখক: সহযোগী সম্পাদক, জুড়ীরসময়

জুড়ীরসময়/এস/এমই