কি করে আল্লাহর প্রিয় হবো?

মোঃ মেহেদী হাসান::

আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে বান্দাকে অবশ্যই রবের হুকুম-আহকাম পরিপূর্ণভাবে মেনে চলতে হবে। আল্লাহ ও তার রাসূলের (সা.) আনুগত্য ছাড়া আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়া সম্ভব নয়।

আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে বেশ কিছু আমল অতি জরুরি। ইসলামি স্কলারদের মতে, এসব আমলের প্রেক্ষিতে অন্তরে ঈমানের নূর তৈরি হয়।অন্তরে প্রশান্তি অনুভূত হয়। এমন কয়েকটি আমল হলো-

চোখের হেফাজত করা

এ সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে ইরশাদ করনে, ‘মুমিন পুরুষদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে।

এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

-সূরা নুর: ৩০

এখানে চোখের হেফাজত বলতে বুঝানো হয়েছে, কোনো অবৈধ জিনিস দেখা, যা আল্লাহ ও তার নবী (সা.) নিষেধ করেছেন- তা না দেখা। এসব থেকে বিরত থাকা।

জবানের হেফাজত

মুখ দিয়ে কোনো প্রকার খারাপ কথাবার্তা না বলা। ঝগড়া-বিবাদ, গালাগালি, পরনিন্দা কিংবা গিবত করা থেকে বিরত থাকা। বর্তমান সময়ে তো পরচর্চা করা নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ এটা ভয়াবহ কবিরা গোনাহ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা একে নিজের মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার মতো জঘন্য কাজ হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং কঠোরভাবে এ থেকে মুসলমানদের বিরত থাকতে আদেশ দিয়েছেন।  

রাসূলুল্লাহ (সা.) এক হাদিসে ইরশাদ করেন, ‘মিরাজের সময় আমাকে এমন সম্প্রদায়ের কাছে নিয়ে যাওয়া হলো- যাদের নখ ছিল তামার। তারা তাদের মুখমণ্ডল ও দেহ আঁচড়াচ্ছিল। আমি জিবরাইলকে (আ.) জিজ্ঞাসা করলাম, এরা কারা? তিনি বললেন, এরা তাদের ভাইদের গীবত করত ও ইজ্জতহানী করতো। -মাজহারি

আরেক হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘গীবত ব্যভিচারের চেয়েও মারাত্মক গোনাহ। গীবত ইসলামি শরিয়ত মতে হারাম।  

অন্তরের হেফাজত

অন্তরের হেফাজত তথা নীরবে-নিভৃতেও কোনো প্রকারের মন্দ কল্পনা করা বৈধ নয়। তেমনি কারো সম্পর্কে মন্দধারণা করাও কবিরা গোনাহ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘মুমিনগণ! তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাকো। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ এবং গোপনীয় বিষয় অনুসন্ধান করো না। ’ -সূরা হুজুরাত : ১২

এ জন্য অন্তরে যে কোনো ধরনের কুচিন্তা ও মন্দ ধ‍ারণা থেকে বিরত থাকতে হবে।এ ছাড়া ও আল্লাহর প্রিয় হওয়ার জন্য মুসলিম ও মুমিনদেরকে কয়েকটি গুণ অর্জন করতে হবে, মুওাকী,মুহসেন,আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুলকারীও সবরকারী হতে হবে।মুওাকী হলো,, যারা অদৃশ্যে বিশ্বাস করে, নামায  কায়েম করে, যে রিযিক আল্লাহ  তাদেরকে দিয়েছে তা থেকে খরচ করে, যে কিতাব আমাদের ওপর নাযিল করা হয়েছে (অর্থাৎ কুরআন) এবং আমাদের  আগে যেসব কিতাব নাযিল করা হয়েছিল সে সবগুলোর ওপর ঈমান আনে, আখেরাতের ওপর একীন রাখা। মুহসেন হলো,যারা নিজেদের এবং অন্যদেরকে ফিতনা ও বিপদ থেকে রক্ষা করে। আল্লাহর ওপর  তাওয়াক্কুল হল, মানুষ কল্যাণকর বিষয় অর্জনের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করবে আর ফলাফলের জন্য আল্লাহর উপর ভরসা করবে এবং তাকদিরের উপর বিশ্বাস রাখবে। সবর বা ধৈর্য কারী বলতে ‍বুঝায়- আনন্দ, প্রতিকূলতা, দুঃখ এবং উদ্বেগ ইত্যাদির সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং মন্দ কাজগুলি এড়ানো।এ গুণ গুলো অর্জন করতে পারলে আমরা আল্লাহর প্রিয় হবো। আল্লাহর প্রিয় হওয়ার তাওফিক  চাই আমরা।আমিন।


লেখকঃ শিক্ষার্থী,আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম।  


জুড়ীরসময়/ডেস্ক/এবিডি