আমার দুর্নীতির হাতেখড়ি!

আমার দুর্নীতির হাতেখড়ি!


জাহিদুল ইসলাম জাহিদ::

ছোটবেলায় ডাক্তারে গেলাম। খুব শান্তভাবে বসে রইলাম সিরিয়ালের অপেক্ষায়।  কিন্তু কেনো জানি সিরিয়াল টা আটকে গেছে ডাক্তার তো রোগী দেখেই যাচ্ছেন অনবরত। তখনই একটা শিক্ষা লাভ করলাম,সিরিয়ালের লোকের সাথে একটা নিরব চুক্তিতে যেতে হয় তাহলেই সিরিয়াল খুব তাড়াতাড়ি চলে আসে। এখন থেকে আর সিরিয়লের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না।অল্প বয়সেই আমিও সমঝোতা চুক্তি শিখে গেছি।

একদিন জরুরি কাজে এক দপ্তরে যাই। সব কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকা সত্বেও এটা লাগবে ঐটা লাগবে, এভাবে হবে না ঐভাবে! এমন কথা শুনতে শুনতে তিন,চার দিন হেটে জুতো প্রায় ক্ষয়প্রাপ্ত। অতপর এক পরোপকারি মানুষের স্বরনাপন্ন হই। বাহ্!  কি চমৎকার ব্যাপার। স্ব শরিরে উপস্থিত হয়ে যে কাজটি হয় নি এখন বাড়িতে বসেই কাজটি হয়েগেলো। ঐ পরোপকারী ব্যক্তিটি বাংলা অভিধানে দা-লা-ল শব্দে পরিচিত।

গাড়ী করে একদিন শহরে যাচ্ছি।  ট্রাফিক আটকালো। কাগজপত্রে হয়তো কোন ত্রুটি ছিল। দীর্ঘ বাকবিতন্ডা।  যুক্তি তর্ক বিতর্ক। তারপর আলতো করে ড্রাইবার সাহেব হাতটা মিলালো  তাৎক্ষণিক সম্পর্কটা বদলে মধুরতায় রূপান্তরিত হলো। সেদিন থেকে আমিও অনেক কিছু শিখেগেছি।।

যাই হোক, একটি নিষ্পাপ শিশুকে দুর্নীতিপরায়ন করে তোলার জন্য আমাদের কথিত স্মার্টনেস-ই যথেষ্ট। এখন আমরাই প্রতিনিয়ত একে অন্যকে পরামর্শ দিয়ে থাকি যে কিভাবে দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে স্মার্টলি কাজ করতে হয়। আর এভাবে ভাইরাসের মতো দুর্নীতিও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সংক্রামিত হচ্ছে।

আমরা দুর্নীতিবাজ অন্ততঃ পরবর্তী প্রজন্মকে মানুষ হওয়ার জন্য একটি ভালো পরিবেশ তৈরী করে দেই। যদিও তাদের সাময়িক কষ্ট হবে বিনিময়ে তো একটি সৎ, সাহসী প্রজন্ম তৈরী হবে।

জুড়ীরসময়/জাহিদ/সাইফ