একজন মানবিক পুলিশের গল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক::

মো. সাঈদুজ্জামান। মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নের বটনীঘাট গ্রামের বাসিন্দা।  ঢাকায় বড় বোনের বাসায় বেড়াতে গেছেন। বোনের বাসা ঢাকা উত্তরা থেকে রওয়ানা দেন মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানার খানার উদ্দেশ্যে। সেখানে গিয়ে দেখেন তার ওয়ালেট নেই। ওয়ালেট হারিয়ে মন খারাপ তার। হঠাৎ অপরিচিত একটি নাম্বার থেকে কল আসে তার মোবাইলে।  সেখান থেকেই জানতে পারেন তার ওয়ালেটটি পাওয়া গেছে। অবশেষে এক পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে তিনি ওয়ালেটটি ফিরে পান। ওয়ালেট পাওয়ার ঘটনাটি তার ব্যবহৃত ফেসবুক পোস্টে তুলে ধরেন তিনি। জুড়ীরসময়ের পাঠকদের জন্য তার ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

ঘটনা টা শুরু ঢাকা উত্তরায়। উত্তরা থেকে মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানা এর উদ্দেশ্য যাচ্ছিলাম।সবকিছুই ভালই কাটছিল অনেক মজা করেছিলাম। ঘুরাঘুরি শেষে মিরপুর থেকে সিএনজিতে রওয়ানা দিলাম।গাড়ি তখন চলছে হঠাৎ কি করে যে ঘুম আসে বুঝতে পারলাম না।  এটা আমার একাটা খারাপ অভ্যাস ও বলা যায়।

হঠাৎ ভাইয়া (বোন জামাই) ডাক দিলেন সাঈদ নেমে পড়।আমিও নেমে পড়লাম কিছু দুর গিয়ে হঠাৎ আমার পকেটে হাত দিয়ে দেখি আমার ওয়ালেট নেই।ভাইয়াকে বললাম আমার ওয়ালেট পাচ্ছি না। তখন আমার মনে পড়ল, মনে হয় গাড়িতে পড়েগেছে। তখন আমি আর ভাইয়া সেই সিএনজিকে খুজতে লাগলাম। অনেক খুজার পরে ও পাইনাই। তখন আর কি মন খারাপ করে বাসায় আসলাম ।আমার ওয়ালেটে আমার নাম,ঠিকানা ছবি,মোবাইল নাম্বার  সবকিছুই ছিল।

মন থেকে আসা ছেড়েই দিয়েছি ঢাকা শহর বলে কথা ।হঠাৎ করে প্রায় ৪:১০ এর দিকে একটা আননউন নাম্বার থেকে কল আসে।আমি কলটা রিসিভ করলাম উনি সালাম দিয়ে বললেন আপনার কি কিছু হারিয়েছে আমি বললাম জ্বি আমার ওয়ালেট হারিয়েছে। তিনি আমাকে বললেন উপযুক্ত প্রমান দিতে পারলে ওয়ালেট পাবেন। আমি বললাম ঠিক আছে।তখন তিনি আমাকে একটি ঠিকানা দিলেন টঙ্গি সরকারি কলেজে এর সামনে এসে দেখা করার জন্য।আমি বললাম আমি এক ঘন্টার মধ্যে আসছি। তখন আমার মন খুব খুশি ।ভাইয়ার সাথে বাইকে করে রওনা দিলাম টঙ্গির উদ্দেশ্য। প্রায় এক ঘন্টার পর পৌছালাম। তখন আমি সেই নাম্বারে কল করি উনি বললেন আমি আসছি আপনারা একটু দাঁড়ান। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছুক্ষন পর উনি 

আসলেন। আসলে উনি ছিলেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা।উনি আমাকে সবকিছুর প্রমান দিতে বললেন  আমি সবকিছুই ঠিকঠাক প্রমান দিলাম তখন তিনি বললেন ঠিক আছে। তারপর উনি আমার ওয়ালেট আমাকে দিলেন।আমি উনাকে প্রশ্ন করলাম আপনি কি ভাবে পেলেন? উনি বললেন আমি ঢাকা থেকে টঙ্গিতে আসার সময় সিএনজির সিটে পাই।অবশেষে সেই পুলিশ ভাইটিকে ধন্যবাদ  জানিয়ে আসলাম। আসলে সব পুলিশ খারাপ নয়। এখনও অনেক সৎ ও ভালো পুলিশ আছে আমাদের দেশে। 

সেই পুলিশ ভাইটির নাম ছিল কবির।

তারপর আর কি আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। অবশ্য এই ঘটনা থেকে অনেক বড় একটা শিক্ষা পেলাম৷  আলহামদুলিল্লাহ....


জুড়ীরসময়/ ডেস্ক/ আশরাফ /এবিডি