জুড়ীতে সংস্কার প্রকল্পে অর্থ আত্নসাতের অভিযোগ





বিশেষ প্রতিবেদক:

মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের বেলাগাঁও গ্রামের রাবার ড্যামের পলিমাটি অপসারণ ও সংস্কার প্রকল্পের অর্থ লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এব্যাপারে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে ইউএনও বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে। ইউএনও সোনিয়া সুলতানা উপজেলা কৃষি, সমবায় ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে অভিযোগটি সরেজমিন তদন্ত করে যৌথ প্রতিবেদন প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রাবার ড্যামের পলিমাটি অপসারণ ও সংস্কারের নামে জায়ফরনগর ইউপি চেয়ারম্যান এডিপি বরাদ্দে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার ভুয়া প্রকল্প তৈরী করেন। সিরাজুল ইসলাম মেম্বারকে প্রজেক্ট চেয়ারম্যান করে কমিটি দাখিল করেন। বাস্তবে বিগত দুই বছর রাবার ড্যামের কোন পলি অপসারণ ও সংস্কার কাজ হয়নি। এছাড়া রাবার ড্যামকে কেন্দ্র করে একটি চক্র লাখ লাখ টাকার মাছ লুট করছে। আবেদনে এ ভুয়া প্রকল্পে  সরকারি অর্থ আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে দাবি জানানো হয়।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বেলাগাঁও রাবার ড্যামের পলি অপসারণ ও সংস্কার কাজের জন্য গত বছরের ২১ অক্টোবর একটি প্রকল্প পাস হয়। ২০২১-২২ অর্থবছরে উপজেলা উন্নয়ন তহবিল (এডিপি) থেকে এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় এক লাখ ২০ হাজার টাকা। প্রকল্পের কাজটি ১০  ফেব্রুয়ারি শুরু করে ২৫ ফেব্রুয়ারি সম্পন্ন করা হয়। প্রকল্প কমিটির চেয়ারম্যান করা হয় ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলামকে। প্রকল্পে ১৯ জন শ্রমিক প্রতি ৪০০ টাকা রোজে টানা ১৫ দিনে প্রতিদিন ৬০০০ টাকা করে মোট ১ লাখ ১৪ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়। এছাড়া মেশিন  মেরামত বাবাদ আরোও ৬ হাজার টাকা খরচসহ সর্বমোট ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয়  দেখানো হয়।

সরেজমিনে গেলে রাবার ড্যাম সংলগ্ন বাসিন্দা সাত্তার মিয়া জানান ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি হিসেবে রব মিয়াকে ১০/১২ জন শ্রমিক নিয়ে ৬/৭ দিন কাজ করতে দেখেছেন। এতে ৫০/৬০ হাজার টাকা ব্যয় হওয়ার কথা। এভাবে বেশি টাকা ব্যয় দেখিয়ে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করলে দেশেরই ক্ষতি। তিনি তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। এ প্রজেক্ট কমিটির সদস্য বেলাগাও গ্রামের কামরুজ্জামান ও ফারুক আহমদ বলেন, আমাদের  না জানিয়ে সদস্য করা হয়েছে। কাজ সম্পর্কে তাদের জানা নেই।

প্রজেক্ট চেয়ারম্যান ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম জানান, কাজে কোন অনিয়ম করেননি। বরাদ্দ অনুযায়ি প্রায় ৪ মাস আগে রাবারড্যামের পলি পরিষ্কার ও সংস্কার করেন। এতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। এখনও  বিল উত্তোলন করেননি।

ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম রেজা বলেন, বিগত ৫-৬ বছর ধরে উক্ত রাবার ড্যামের পলি পরিস্কার ও সংস্কার কাজ যথাযথভাবে করেছি। কোন অনিয়ম হয়নি। কাজ সম্পন্ন করে প্রকল্প কমিটি জমা দেয়া হয়েছে। এখনও বিল উত্তোলন হয়নি। উদ্দেশ্যমুলকভাবে আমাকে ও ইউপি মেম্বারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।  

উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, ইউএনও’র নির্দেশে অভিযোগটি তদন্ত করছি। তদন্ত সম্পন্ন হলেই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

জুড়ীরসময়/মনিরুল/এএ