দেশ কি আবারও '৭৪' এ ফিরে যাচ্ছে?

দেশ কি আবারও '৭৪' এ ফিরে যাচ্ছে?


খালেদ মাসুদ::

দ্রব্যমূল্য মধ্যবিত্তের হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ এখন আর সহজে কোনো কিছু কিনতে পারছে না। যেহেতু দ্রব্যমূল্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই মানুষের এখন নুন আনতে পান্তা ফুরায়। যখন বিশ্ববাজারে তেলের দাম ছিল নিম্নগামী তখন বাংলাদেশ সরকার কম দামে ক্রয় করে, কিন্তু তারা পূর্বের দাম রেখেছে।

এদিকে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে সরকার তেলের দাম বৃদ্ধি করে।যার ফলে পরিবহন শ্রমিক মালিকরা অবরোধ ডাকলে সরকার তাদের সাথে সমঝোতা করে ডিজেল পেট্রোলের দাম এর সমন্বয় করে ভাড়া বৃদ্ধি করে। যেহেতু এখানে সরকার এবং ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন তার মানে হচ্ছে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে সেই টাকাটা ব্যবসায়ীদের হাতে চলে যাচ্ছে, সরকারের হাতে চলে যাচ্ছে। 

কিন্তু সাধারন মানুষ কোন কিছুই করতে পারতেছে না। যখন মানুষের ইনকাম মানুষ করোনার প্রকোপে নিম্নগামী। কোন কিছু করতে পারতেছে না তখন মোহর মোহর হারে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারের উচিত ছিল সরকার রাজস্ব খাত এই সব পণ্যের ভর্তুকি দিয়ে পণ্য যাতে সাধারণ মানুষ ক্রয় করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখা।কিন্তু সরকার সেদিকে লক্ষ্য না রেখে উল্টো দাম বৃদ্ধি করতেছে। এখন আবার শোনা যাচ্ছে সরকার গ্যাস দাম আবারও বৃদ্ধি করতে চাচ্ছে।

বারবার গ্যাস-বিদ্যুৎ এইসবের দাম বৃদ্ধি করলে এসব দাম বৃদ্ধির প্রভাবে প্রত্যেকটি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়। সাধারণ মানুষের কিন্তু ইনকাম বৃদ্ধি পায় না। দেশের সকল মানুষের টাকাগুলো সিন্ডিকেটের হাতে চলে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের জীবনমানের উন্নতি হচ্ছে না। এদিকে সাধারণ মানুষের হাত থেকে ক্রয় ক্ষমতা চলে যাওয়ার কারণে মানুষ সহজে মৌলিক পণ্যগুলো অন্য কোন পণ্য কিনতে আগ্রহী হচ্ছে না ।

২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ২০০৯ সালের শুরুতে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। দলটি ক্ষমতায় আসার পর থেকে দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলছে। তাই স্বাভাবিক জীবনযাপন মানুষের জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে। মানুষের মধ্যে নানা কারণে বাড়ছে অস্থিরতা। কারণ আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের কোনো সঙ্গতি ও সমন্বয় নেই। ফলে স্বস্তিতে নেই দেশের বেশিরভাগ মানুষ।যেখানে ২০১০ সালে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ ছিলো ৩.৭৬ টাকা ইউনিট যা ২০২০ সালে হয় ৭.১৬ টাকা,৯০% মূল্য বৃদ্ধি পায়। ২০০৯ সালে গ্যাসে একচুলা ছিলো ৪০০৳, ২০২১ সালে দাম নির্ধারণ করা হয় ৯৭৫৳,যা ১৪৪% বৃদ্ধি পায় গ্রাহক পর্যায়ে। ডিজেল ছিলো ২০০৯ সালে ৪৪৳ লিটার আজ যা ৮০৳ লিটার, বেড়েছে ৮২%।ওয়াসার পানি ২০০৮ সালে ছিলো ৫.৭৫৳ লিটার, ২০২১ সালে হয় ১৫.১৮৳, ২৬৪% মূল্য বৃদ্ধি পায়। 

এইভাবে মূল্য বৃদ্ধি পেতে থাকলে দেশে আবারও দুর্ভিক্ষ দেখা দিবে। বরাবরের মতোই বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা দেশের মানুষের সামনে ফুটে উঠেছে। সরকার ভর্তুকির দিকে না হেঁটে দেশের মানুষকে একবেলা আহারের দিকে হাটাতে যাচ্ছে। ব্যবসায়ী ও সরকারের মধ্যে যখনই আলোচনা হয় তখন দেখা যায় ব্যবসায়ীরাই জিততে। যা দেশের অন্ধকার ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দেয়।

লেখক: শিক্ষার্থী, মদন মোহন কলেজ

জুড়ীরসময়/ডেস্ক/সাইফ