জুড়ীতে খুতবায় বাধা ও ইমামের ভাইরাল ছবি নিয়ে কিছু কথা

জুড়ীতে খুতবায় বাধা ও ইমামের ভাইরাল ছবি নিয়ে কিছু কথা


আশরাফ আলী::

শিরোনাম দেখে আপনারা ইতিমধ্যে বুঝে গেছেন কি নিয়ে লিখবো। বুঝারই কথা। এটি নিয়ে সবাই আলোচনা করছেন। করার কথা রয়েছে। কারণ বিষয়টি অনেক দূর গড়িয়েছে। এটি নিয়ে জেলা ব্যাপী তুমুল আলোচনা সমালোচনা চলছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঘটনাটি টক অব দি মৌলভীবাজার। এই ঘটনাটি জাতীয় ও স্থানীয় প্রিন্ট এবং অনলাইন গণমাধ্যমে বেশ ফলাও হয়েছে।
 
গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার পশ্চিম বাছিরপুর জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মামুনুল হক গত ২৭ নভেম্বর শুক্রবার জুময়ার খুতবায় মূর্তি ও ভাস্কর্য নিয়ে আলোচনা রাখাকালে উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ইকবাল ভূইয়া ইমামের কথায় বাধা দিয়ে বলেন মূর্তি ও ভাস্কর্য এক নয়। এবং ভাস্কর্য ও মূর্তি যে এক এ কথাটি তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে। এ কথা শুনার সাথে সাথে মুসল্লিরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। ঘটনাটি নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা ও মুসল্লিদের মধ্যে মারামারি হয়। মারামারিতে মুসল্লিদের একজন আহত হন। পরে ইকবাল ভূইয়া ফোন করে পুলিশকে ঘটনাস্থলে এনে ৫ জনকে আসামী করে মামলা করেন। মামলার বিষয়টি পুলিশ নিশ্চিত করে। মূল ঘটনা হলো এত টুকুই। 

জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত নিউজ: 

নিউজ পড়তে নিচের লাল রঙ্গের লেখাতে ক্লিক করুন>>

 

 

কিন্তু বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঘটনাটি নিয়ে ইমামের ভূয়া একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। আসলে এই ছবির সাথে মসজিদের ইমামের কোন সম্পর্ক নেই। জুময়ার খুতবায় ইমামের আলোচনা ছিল ভাস্কর্য ও মূর্তি নিয়ে। এই আলোচনায় ছাত্রলীগ নেতা হস্তক্ষেপ করেছিলেন। যার ফলে উপস্থিত মুসল্লিগণ ছাত্রলীগ নেতার ওপর ক্ষীপ্ত হন। এখানে ইমামকে মারাত্বক আঘাত করে জখম করা হয়েছে বলে একটি ছবি প্রচার হচ্ছে আসলে তা সঠিক নয়।
 

ঘটনাটি একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ইমামকে আঘাত করা হয়েছে বলে কোন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি। এমনকি বাছিরপুর গ্রামে আমার বাড়ি। আমি ভালো করে খোঁজ নিয়ে জেনেছি ইমামকে মারার কোন ঘটনা ঘটেনি। স্বয়ং ইমামের সাথে আমার কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ইকবাল ভূইয়া ও তার বাবা কাইয়ূম ভূইয়া তাকে মসজিদের ভিতরে অশালীন ভাষায় কথা বলেছেন। এবং হুমকি ধামকি দিয়েছেন। তাকে আঘাতের কোন ঘটনা ঘটেনি। তাকে প্রধান আসামী করে আরও ৪ জনের বিরোদ্ধে থানায় মামলা হয়।
 
তবে ইমামের আলোচনায় ছাত্রলীগ নেতার হস্তক্ষেপের কারণে নামাজ শেষে এটা নিয়ে মুসল্লি ও ছাত্রলীগ নেতার পরিবার এবং অনুসারীদের সাথে মারামারি হয়েছে। মারামারির ঘটনায় মসজিদ কমিটির একজন আহত হন।

ফেসবুকে অনেকেই শেয়ার করছেন ইমাম সহ ৫ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাটি সেরকম নয়। আসলে সেটা হচ্ছে ছাত্রলীগ নেতা ইমাম সহ ৫ জনকে আসামী করে থানায় মামলা করেছেন। ইমাম সহ ৫ জন আহত নয়, ৫ জনের ওপর মামলা হয়েছে। এটাই সঠিক।

তাই সবাইকে বলব ভুল তথ্য শেয়ার করবেন না। ভুল তথ্য দিয়ে গুজব ছড়াবেন না। এই গুজবে যদি কোন অঘটন ঘটে তাহলে এর দায়ভার নিতে হবে গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদেরকে। আসুন সবাই সতর্ক হই।

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট