দোয়া কবুলের সময়




লেখকঃ খালেদ মাসুদ

 মানুষ হিসেবে আমরা খুবই দুর্বল। প্রভুর সাহায্য ছাড়া আমাদের কিছুই করার ক্ষমতা নেই। আমাদের সুখে-দুঃখে, বিপদ-আপদে সর্বাবস্থায় অমুখাপেক্ষী সেই মহান রবের দরবারে চাইতে হয়। এই চাওয়াটাকে আমরা দোয়া বলে জানি। সুযোগের ব্যবহার করতে কেউ কখন পিছিয়ে থাকে না। সবাই চায় কিভাবে সহজে কাজ আদায় করা যায়। তাই সময়ের সৎ ব্যবহার করা দরকার।

রাসুল(সঃ) বলেছেন'এক মাত্র দোয়াই মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে'।দোয়ার মাধ্যমে গোলাম তার মনিবের কাছে সাহায্য চায়। তিনি এমন একজন মনিব, যিনি কখনও তার গোলামদের ফিরিয়ে দেন না। সে যতো বড়ই অপরাধ করুক, দুনিয়ায় আদালতে অবশ্য অপরাধ করলে শাস্তি পেতে হয় অনেক সময় মাফ পাওয়াও দুর্ষ্কর।কিন্তু মুমিনের মালিকের আদালতে মাফ চাইলেই মাফ পাওয়া যায়। সে জন্য মালিকে তরে চোখের পানি ঝরিয়ে মাফ চাইতে হয়। ক্ষমা চাওয়ার একামাএ মাধ্যম হলো দোয়া। 

ক. রাসুল(সঃ) দোয়া কবুলের জন্য কতো গুলো শর্ত শিখিয়ে দিয়েছেন তার উম্মতদের যেমন-

১. আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কাউকে না ডাকা। [সুনানে তিরমিযি (২৫১৬)]

২. শরিয়ত অনুমোদিত কোন একটি মাধ্যম দিয়ে আল্লাহ্‌ তাআলার কাছে ওসিলা দেয়া।

৩. দোয়ার ফলাফল প্রাপ্তিতে তাড়াহুড়া না করা। [সহিহ বুখারী (৬৩৪০) ও সহিহ মুসলিম (২৭৩৫)]

৪.দোয়াতে মনোযোগ থাকা। দোয়াকালে দোয়াকারীর মনোযোগ থাকবে এবং যাঁর কাছে প্রার্থনা করা হচ্ছে তাঁর মহত্ত্ব ও বড়ত্ব অন্তরে জাগ্রত রাখবে। [সুনানে তিরমিযি (৩৪৭৯), সহিহুল জামে (২৪৫)]

৫.খাদ্য পবিত্র (হালাল) হওয়া।

৬.মিনতি করে দোয়া করা।

এছাড়াও আরও কিছু শর্ত আছে।


খ. কিছু কিছু সময় আছে, যখন মালিক তার গোলামদের দোয়া কবুল করেন।

যেই দোয়াগুলো আল্লাহ খুব দ্রুত কবুল করে থাকেন, বেশি কবুল হয় : 

১. বান্দা সিজদা অবস্থায় স্বীয় প্রভুর সর্বাধিক নিকটবর্তী হয়। অতএব, তোমরা অধিক মাত্রায় (ঐ অবস্থায়) দোয়া করো। (মুসলিম :৪৮২, নাসায়ী : ১১৩৭, আবু দাউদ : ৮৭৫, আহমাদ : ৯১৬৫)।

২. রাত্রির শেষভাগে এবং ফরজ নামাজসমূহের শেষাংশে। (তিরমিযী ৩৪৯৯)

৩. আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে কৃত দোয়া কখনই ফিরিয়ে দেয়া হয় না। (তিরমিজি : ৩৫৯৪, আবু দাউদ : ৫২৫)

৪. যেকোনো প্রয়োজনে কোনো মুসলিম যদি দোয়া ইউনুস পড়ে, আল্লাহ তার দোয়া কবুল করবেন। (তিরমিযী, সহিহুল জামি : ৩৩৮৩)। 
৫. বৃষ্টির সময়ে দোয়া। (আবু দাউদ, সহীহুল জামি : ৩০৭৮)

৬. লাইলাতুল ক্বদরের সময় দোয়া।

৭. যমযম পানি পান করার আগে দোয়া।

৮. মজলুমের দোয়া।

৯. সন্তানের জন্য পিতার দোয়া।

১০. আরাফার দোয়া।

১১. অসহায় বিপদগ্রস্তের দোয়া।

১২.রোজাদারের দোয়া।

১৩.ইফতারের আগের দোয়া।

১৪.জুমার দিনে বিশেষ একটা সময়ের দোয়া।

১৫.অসুস্থ ব্যাক্তির দোয়া।


কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে।আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছেন আরও দু-তিন দিন টানা বৃষ্টি থাকবে। আর বৃষ্টির সময় দোয়া কবুল হয়। তাই আর কেনো অলস সময় কাটাবো না। যখন বৃষ্টি আসবে তখন মালিকের তরে হাত পাতুন। চান মালিকের কাছে। নিশ্চয় রব সব কিছু জানেন। দোয়া কবুলের দৃঢ় আত্মবিশ্বাস রাখা চাই। নিশ্চয় আল্লাহ তার বান্দাদের সব দোয়া কবুল করবেন।

জুড়ীর সময়/ডেস্ক