মেয়াদ নেই জুড়ী হাসপাতালের আগুন নেভানোর যন্ত্রগুলোর: জানেন না কর্তৃপক্ষ



সাইফুল্লাহ হাসান:: 

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রগুলো গত তিন বছর থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে আছে। ফলে যে কোন সময় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে তা তাৎক্ষণিক নিয়ন্ত্রণে আনার সক্ষমতা হারিয়েছে এই যন্ত্রগুলো। 

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, চার তলা বিশিষ্ট এই হাসপাতালের প্রতিটি তলার দেয়ালে ঝুলানো আছে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র। তবে এসব যন্ত্রগুলির কোনটিরও মেয়াদ নেই।  তিন বছর আগেই শেষ হয়েছে যন্ত্রগুলোর মেয়াদ। 

দেখা যায়, সবকটির মেয়াদ ২০১৭ সালের ৩ আগস্ট শেষ হয়ে গেছে। মেয়াদ শুরু হয়েছিলো ২০১৬ সালের  ৪ আগস্টে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০ টির মতো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র হাসপাতালে আছে। বিল্ডিং যখন তৈরী করা হয় তখন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এগুলো লাগিয়েছে, পরবর্তীতে এগুলো আর পরিবর্তন করা হয়নি বলে জানান হাসপাতালের প্রধান হিসাব রক্ষক দিপ্রাশ দাশ।

হাসপাতালে গিয়ে কথা হয় স্থানীয় সাজিদ মাহমুদের সাথে। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় হাসপাতালে আসি কিন্তু আগুন নেভানোর যন্ত্রগুলো যে মেয়াদোত্তীর্ণ তা তো দেখিনা। আমরা মনে করি অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা ঘটলে এইগুলো দিয়ে তাৎক্ষণিক আগুন নেভানো যাবে। তাহলে হাসপাতালে যে রোগীরা আসে তারা  ঝুঁকিতে আছে।

সেখানকার স্থানীয় একটি সংগঠনের সিনিয়র সহ সভাপতি আশরাফ আলী বলেন, সম্প্রতি ইউনাইটেড হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে এসি বিস্ফোরণে আগুনের ঘটনায় পাঁচজন রোগী মারা যাওয়ার পর বেরিয়ে এলো এখানকার অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রগুলোর মেয়াদ নেই। সরকার কোটি টাকা ব্যয়ে জনসাধারণের জন্য এসব প্রতিষ্ঠান তৈরী করছে, কিন্তু কর্তৃপক্ষের গাফিলতি আর অবহেলায় বড় ধরনের দূর্ঘটনায় পড়তে হয়। কেউতো আর অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের মেয়াদ আছে কিনা সেদিকে খেয়াল করছে না। সরকারি হাসপাতালের যদি এই অবস্থা হয়। হঠাৎ আগুন লাগলে কর্তৃপক্ষ কি পদক্ষেপ নিবেন। এরকম উদাসীনতা একেবারেই কাম্য নয়।

জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সমরজিৎ সিংহ বলেন, হাসপাতালে অনেকগুলো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রয়েছে কিন্তু মেয়াদ শেষ হয়েছে কি-না আমার জানা নেই। নিশ্চিত হয়ে বলতে হবে। 

এবিষকে কুলাউড়া উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার বেলায়েত হোসেন বলেন, আমার জানামতে তারা এটি অফিসিয়ালি কোনো কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে লাগিয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে লাগানো হলে এটা অবশ্যই জানতাম। মেয়াদ তিন বছর আগে যেহেতু শেষ হয়ে গেছে সেজন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিৎ ছিলো সাথে সাথে পরিবর্তন করা। তারপরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবো এই বিষয়ে।

মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. তউহীদ আহমদ বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখছি। মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রগুলো সরিয়ে নতুন যন্ত্র স্থাপনের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দেওয়া হবে।’

সূত্র : রাইজিংবিডি

জুড়ীরসময়/ডেস্ক