বিসিএস প্রস্তুতি এবং আমার কলেজ শিক্ষক হওয়া



 মো. জহিরুল ইসলাম::

বেসরকারি একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতাম তখন। শিক্ষকতার পাশাপাশি ইন্স্যুরেন্স, কোচিং, শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ থেকে আয় সব মিলিয়ে ভালই চলছিল। সরকারি চাকরিতে বয়সের আবেদন প্রায় শেষ পর্যায়ে। এর মধ্যে কোথাও আবেদন করা হয় নি। দীর্ঘদিন স্কুলে চাকরির কারণে স্কুলটার জন্য মায়া হয়ে গিয়েছিল। মেডিকেল ভর্তি কোচিং রেটিনা'র সাবেক মহাপরিচালক, ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ডা. মুহিবুর রহমান জুয়েল ভাই সদ্য বিসিএস পাশ করে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যোগদান করেছেন। আমাকে বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বললেন। সাথে এটাও বললেন আপনি যেহেতু বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন গণিত এবং ইংরেজি ভাল বুঝেন, প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিলে সহজেই প্রিলিমিনারি পাশ করতে পারবেন। অনেক সাহস এবং আত্মবিশ্বাস পেলাম। 

সিলেট থেকে ওরাকল বিসিএস প্রিলিমিনারি এর পুরো একসেট বই কিনে নিয়ে পড়া শুরু করলাম। কিন্তু যেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন ছিলো ব্যস্ততার জন্য সেভাবে নেওয়া হয়ে উঠে নি। সুতরাং প্রিলিমিনারি পাশ করতে পারি নি। কিন্তু বিসিএস এর প্রস্তুতির ফলে ঐ বছরের কলেজ শিক্ষক নিবন্ধন, মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষক নিবন্ধন এবং প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়ে পাশ করেছিলাম। প্রাথমিক এবং মাধ্যমিকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ না পেলেও ২০১৮ সালে এনটিআরসি'র মাধ্যমে কলেজের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পাই এবং এমপিওভুক্ত হই। বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। 

ডা. জুয়েল ভাইয়ের অনুপ্রেরণা কখনোই ভুলার নয়। তাঁর পরামর্শ এবং আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে আমি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।  আমাদের সমাজের অনেকেই অবহেলা করে বা সময়ের কাজ সময়ে না করার কারণে জীবনে অনেক ভুগতে হয়। আমাদের পরিচিত / প্রতিবেশীদের আমরা যদি যার যার অবস্থান থেকে সু পরামর্শ দেই এবং অনুপ্রাণিত করি, তারাও একদিন তাদের যোগ্যতাকে কাজে লাগাতে পারবে। 


লেখকঃ প্রভাষক

ভূকশিমইল সেকেন্ডারি স্কুল এন্ড কলেজে